আবাদি জমিতে পুকুর কেটে মাটি ইটভাটায় বিক্রি
‘জমির প্রকৃতি পরিবর্তন করা যাবে না’- এমন সরকারি নির্দেশ থাকলেও বগুড়ার ধুনটে তিন ফসলি জমিকে পরিণত করা হচ্ছে গভীর পুকুরে। এতে করে উপজেলায় আশঙ্কাজনক হারে কমছে কৃষি জমির পরিমাণ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলায় তিন ফসলি জমিতে মেশিন দিয়ে ৮-১০ ফুট গভীর করে জমির চারদিকে বাধ দিয়ে পুকুর খননের মহোৎসব চলছে। দিনরাত বিরতিহীনভাবে পুকুর খনন করে সে মাটি আবার বিভিন্ন ইটভাটায় সরবরাহ করা হচ্ছে। কৃষকরা না বুঝে হারাচ্ছেন তাদের উর্বর ফসলি জমি, অন্যদিকে আঙুল ফুলে কলাগাছ হচ্ছে এক শ্রেণির প্রভাবশালী পুকুর ব্যবসায়ীর।
শ্রেণিভেদে উপজেলার প্রায় সকল জমিতেই সারা বছর কোনো না কোনো ধরনের ফসল হয়। কিন্তু কৃষি উপকরণের মূল্য বৃদ্ধি এবং উৎপাদিত ধানের যথাযথ মূল্য না পাওয়ায় প্রতি বিঘা জমিতে ১২ হাজার টাকার বিনিময়ে ৫-১০ বছর মেয়াদের চুক্তি করছে কৃষকরা।
চুক্তির আওতায় তাদের ফসলি জমি পুকুরে পরিণত করা হচ্ছে। জমির এই মাটি প্রতি গাড়ি (ট্রাক্টর) ৭০০ টাকায় বিভিন্ন ইটভাটায় বিক্রয় করছে পুকুর ব্যবসায়ীরা।
সরেজমিন বেলকুচি গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, জেকেবি ব্রিকস নামে ইটভাটার মালিক জুয়েল সরকার তিন ফসলি জমি থেকে গর্ত করে মাটি কেটে নিচ্ছেন। ফলে চারপাশের ফসলি জমি চাষাবাদে হুমকির মুখে পড়ার আশঙ্কায় আছেন ভূমি মালিকরা।
ফসলি জমি থেকে অবৈধভাবে মাটি কাটা বন্ধের জন্য গ্রামবাসী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট প্রায় এক মাস আগে অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না।
এ বিষয়ে জেকেবি ব্রিকস নামে ইটভাটার মালিক জুয়েল সরকার জানান, জমি থেকে যেভাবে মাটি কেটে নেয়া হচ্ছে তাতে চাষাবাদের কোনো ক্ষতি হবে না। তারপরও গ্রামের কতিপয় ব্যক্তি মিথ্যা অভিযোগ করছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মশিদুল হক বলেন, ‘জমির প্রকৃতি পরিবর্তন করা যাবে না’- ভূমি মন্ত্রণালয়ের এমন নির্দেশনা থাকলেও তা অমান্য করে এক্সকেভেটর মেশিন দিয়ে মাটি কেটে ফসলি জমিতে পুকুর খনন করা হচ্ছে। কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে আসছি পুকুর খনন থেকে বিরত থাকার জন্য’।
ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সঞ্জয় কুমার মহন্ত বলেন, বেলকুচি গ্রামে আবাদি জমি থেকে অবৈধভাবে মাটি কর্তনের অভিযোগটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এসএমএম/এমকেএইচ