প্রচারণায় ভাসছে নৌকা, গোপনে ধানের শীষ
তৃতীয় ধাপে ৩০ জানুয়ারি টাঙ্গাইলের মির্জাপুর পৌর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ফলে শেষ দিকে জোরেশোরে চলছে প্রচারণা। প্রার্থীরা ভোটারদের মন জয় করতে সভা-সমাবেশ চালিয়ে যাচ্ছেন। দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি।
সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ছুটছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। পৌর শহরজুড়ে শোভা পাচ্ছে প্রার্থীদের পোস্টার। দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলছে মাইকিং। দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই সরগরম হয়ে উঠছে শহর। পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে অপেক্ষার প্রহর গুণছেন ভোটাররা। ভোটকে কেন্দ্র করে পুরো এলাকা যেন উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।
প্রয়াত মেয়র সাহাদত হোসেন সুমনের স্ত্রী বর্তমান মেয়র ও নৌকার প্রার্থী সালমা আক্তার শিমুল তার ও স্বামীর উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ প্রচারণায় ভোট প্রার্থনা করছেন। দিন-রাত গণসংযোগ, উঠান বৈঠক আর সভা-সমাবেশ মাধ্যমে ব্যস্ত সময় পার করছেন তিনি।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ থেকে শুরু করে জেলা এবং ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে ভোট চাইছেন। সেই সাথে পৌর শহরের উন্নয়নে এক জোট হয়ে শিক্ষক, ব্যবসায়ীসহ সর্বস্তরের মানুষ প্রকাশ্যে ভোট চাচ্ছেন নৌকার পক্ষে। এ সময় তারা তুলে ধরছেন মির্জাপুর পৌরসভাসহ উপজেলায় গত পাঁচ বছরের উন্নয়নের চিত্র।
অপরদিকে মাইকিং করে প্রচারণা চালালেও গোপনে চলছে ধানের শীষের মূল নির্বাচনী প্রচারণা। ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী ডি এম শফিকুল ইসলাম ফরিদের পক্ষে প্রকাশ্যে কোনো প্রচারণা কিংবা গণসংযোগ নেই বললেই চলে।
যেন ফাঁকা মাঠেই গোল দিতে নেমেছে আওয়ামী লীগ। চায়ের দোকান, আড্ডা, আলোচনায় একটাই প্রশ্ন- বিএনপি একটি বড় দল ও তাদের প্রচুর ভোট থাকা সত্ত্বেও প্রার্থীর প্রচারণা এবং নেতাকর্মীরা মাঠে নেই কেন। সচেতন মহলের দাবি দলীয় কোন্দলের কারণে তারা এক হয়ে মাঠে নামতে পারছেন না। পোস্টার, মাইকিং, গণসংযোগ, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, উঠান বৈঠকসহ সব ক্ষেত্রেই নৌকার প্রচার চোখে পড়ার মতো। মির্জাপুর পৌর নির্বাচনকে ঘিরে অনুসন্ধান এবং স্থানীয়দের সাথে কথা বলে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।
পাহাড়পুর এলাকার কামাল মিয়া নামে এক ভোটার বলেন, বিএনপির স্থানীয় প্রথম শ্রেণির নেতারা মাঠে নেই। প্রার্থীর প্রচারণাও কম। এমন অবস্থায় কোন কর্মী প্রকাশ্যে প্রচার কাজে অংশ নিয়ে বিপাকে পড়তে চাচ্ছেন না।
উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার মির্জাপুর পৌরসভাসহ উপজেলায় যথেষ্ট উন্নয়ন করেছে। উন্নয়নের স্বার্থে ভোটাররা আবারও নৌকা মার্কায় ভোট দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে তিনি জানান।
ধানের শীষের মেয়র প্রার্থী ডি এম শফিকুল ইসলাম ফরিদ বলেন, ‘নীরবে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। পায়ে হেঁটে পৌর এলাকার ৮০ ভাগ বাড়িতে গিয়ে ভোট প্রার্থনা করেছি। বাকি দিনগুলোতে সব বাড়িতে পৌঁছে যাবো। ভোটের মাঠ ভালো রয়েছে। জনগণও ভোটের অপেক্ষায় আছে। ধানের শীষেরই বিজয় হবে।’
নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী সালমা আক্তার শিমুল বলেন, আমার প্রয়াত স্বামী সাহাদত হোসেন সুমন গত চার বছরে নাগরিক সেবাসহ যে উন্নয়নমূলক কাজ করেছে এবং আমি গত তিন মাসের অল্প সময়ে পৌরবাসীর সেবা করে যে ভালোবাসা অর্জন করতে পেরেছি তাতে আশা করি দ্বিতীয়বারের মতো পৌরবাসী আমাকে মেয়র হিসেবে নির্বাচিত করবেন।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা উম্মে তানিয়া বলেন, ‘সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণের জন্য সার্বিক কার্যক্রম চলমান আছে।’
এস এম এরশাদ/এসএমএম/জেআইএম