বর-কনে-যাত্রী সবাই মোটরসাইকেলে
বরযাত্রী থেকে শুরু করে বাড়িতে নতুন বউ আনা পর্যন্ত সবই হয়েছে মোটরসাইকেলে। তাই বিয়েটি এখন মাগুরার শালিখায় সর্বত্র আলোচনায়। বর মাগুরার শালিখা উপজেলার আড়পাড়া এলাকার জুয়েল মুন্সী (২৫)। তিনি ওই এলাকার মহর আলী মুন্সীর ছেলে।
সোমবার (১৮ জানুয়ারি) তিনি মাগুরা সদরের ইছাখাদা এলাকার আক্কাস মোল্যার মেয়ে লিমাকে বিয়ে করেন। মাগুরা বাইকার নামের ফেসবুক গ্রুপে মঙ্গলবার (১৯ জানুয়ারি) ছবি পোস্ট করা হয়। তার দাবি, এখানে তিনিই প্রথম মোটরসাইকেলে বিয়ের এমন আয়োজন করলেন। এ বিয়ে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন ব্যাপক আলোচিত হচ্ছে।
জুয়েল জানান, এলাকায় তিনি জুয়েল বাইকার নামে পরিচিত। পড়ালেখা বলতে কলেজের গণ্ডি পার হয়ে মালয়েশিয়া যান। ছয় বছর পর দেশে ফেরেন। এখন ব্যবসায় যুক্ত। মোটরসাইকেল চালানো আর নতুন মডেলের বাইক পরিবর্তন করাই তার শখ। জুয়েলের মাথায় আসে তিনি বিয়ে করবেন মোটরবাইকে। সে ইচ্ছে থেকেই বিয়ের আগে নতুন মডেলের তিন লাখ টাকা দিয়ে টারো জিপি ১ নামের মোটরসাইকেল কেনেন।
জুয়েল জানান, হবু বধূ লিমার সঙ্গে তার সাত বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক। পরে পারিবারিকভাবে বিয়ের দিন ঠিক হয়। সোমবার বিকেলে ২৭টি মোটরবাইকে চড়ে বন্ধু-স্বজনদের নিয়ে মাগুরার ইছাখাদা কনের বাড়ি যান। বিয়ের সব কাজ শেষে নতুন বউ নিয়ে মোটরসাইকেলে শোভাযাত্রা করে বাড়ি ফেরেন।
এই বিয়ে নিয়ে এলাকায় বেশ সরগোল পড়ে। রাস্তার দুই পাশে লোকজন ভিড় করেন বর-কনেকে দেখতে।
জুয়েল দাবি করেন, দেশে তিনিই প্রথম বিয়ে করে মোটরসাইকেলে বউ আনলেন। এটা তার দীর্ঘদিনের শখ ছিল। দুই পক্ষের মুরব্বিরা এভাবে বিয়ে করতে কেউ রাজি হচ্ছিল না। এনিয়ে অনেক ঝামেলা হচ্ছিল। কয়েকবার বিয়ের দিনও পরিবর্তন করা হয়েছে। অবশেষে বাইকে বিয়ে করতে পেরে স্বপ্ন পূরণ হয়েছে।
ফেসবুকে মাগুরা বাইকার গ্রুপের পরিচালক ফয়সাল বলেন, জুয়েলের বাইকে অভিনব বিয়ের বিষয়টি তাদের গ্রুপে সাড়া ফেলেছে।
জুয়েলের বাবা মহর আলী মুন্সী জানান, আমাদের সমাজে মোটরসাইকেলে বিয়ে করার রেওয়াজ নেই। বিষয়টি অনেকেই অন্যভাবে নিচ্ছেন। তারপরও ছেলে নাছোড়। তার শখ পূরণ করতেই এমন আয়োজন।
শালিখা সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমজাদ আলী মোল্যা জানান, তার ইউনিয়নের আড়পাড়া এলাকার জুয়েলের মোটরসাইকেলে বিয়ের খবরটি শুনেছি। বিষয়টি এলাকায় বেশ সাড়া ফেলেছে।
মো. আরাফাত হোসেন/এএইচ/জেআইএম