মাথা গোঁজার ঠাঁই পাচ্ছে ১২শ পরিবার
টাঙ্গাইলে মুজিববর্ষে ঘর পাবেন এক হাজার ২৬৪টি গৃহহীন পরিবার। জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে ১২টি উপজেলায় যাদের জমি আছে, কিন্তু ঘর নেই তাদেরকে এসব ঘর দেয়া হবে।
ইতোমধ্যে আটশ ঘরের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। ১৫ জানুয়ারি প্রথম ধাপে ৫৬৪টি পরিবারের মাঝে ঘর বিতরণ করা হবে।
রোববার (৩ জানুয়ারি) টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর, গোপালপুর, ধনবাড়ী, মধুপুর, ঘাটাইল ও কালিহাতী উপজেলার নির্মাণকাজ পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক ড. মো. আতাউল গণি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মুহাম্মদ শহিদ উল্লাহ, সহকারী কমিশনার মো. সালাহউদ্দিন আইয়ূবী, টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সভাপতি জাফর আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক কাজী জাকেরুল মওলা, কোষাধ্যক্ষ আব্দুর রহিম প্রমুখ।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, যাদের ভূমি ও ঘর নেই তাদেরকে জমিসহ ঘর দেওয়ার প্রকল্প হাতে নিয়েছেন সরকার। এই ধারাবাহিকতায় টাঙ্গাইলের ১২টি উপজেলায় সরকারিভাবে এক হাজার ১৭৪টি পরিবারের মাঝে ঘর দেয়া হবে।
এছাড়াও টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগ, সংসদ সদস্য, উপজেলা আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান, উচ্চবিত্ত মানবিক ব্যক্তিরা ও সরকারি চাকরিজীবীরা মিলে আরো ১০০ ঘর দেয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। প্রতিটি ঘরের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে এক লাখ ৭১ হাজার টাকা। প্রতিটি ঘরে দুইটি শোয়ারঘর, রান্নাঘর, ইউটিলিটি রুম, টয়লেট ও বারান্দা থাকবে।
ভূঞাপুরের ফলদা গাড়া বাড়ি এলাকার জহির উদ্দিন বলেন, গাবসারা ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের বাড়িসহ আমাদের ৪৫ শতাংশ জমি ছিলো। প্রায় ২৫ বছর আগে যমুনার ভাঙনে সব জমি চলে যায়। এরপর থেকে গ্রামে অন্যের জমিতে বাড়ি করে বসবাস করছি।
এরপর ২০১৮ সালে যমুনার ভাঙনে সে বাড়িটিও চলে যায়। তারপর থেকে অন্যের বাড়িতে বসবাস শুরু করি। সরকারের পক্ষ থেকে ঘর পেয়ে খুবই আনন্দিত বলে জানান তিনি।
কহিনুর বেগম বলেন, যমুনায় ঘর বিলীন হওয়ার পর গত চার বছর অন্যের বাড়িতে ছিলাম। ঘর করার মতো টাকা-পয়সা ছিল না। সরকারি ঘর পেয়ে খুবই আনন্দিত হয়েছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু কামনা করছি।
মধুপুর উপজেলার শরবানু বেগম বলেন, ৩০ বছর আগে স্বামী ছেড়ে চলে গিয়েছে। বাবার সম্পত্তিও ভাইয়েরা ভাগাভাগি করে নিয়েছেন। প্রায় দুই বছর মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলাম। নিজের কোনো বাড়ি না থাকায় সরকারি ঘর পেয়ে আমি আনন্দিত।
এ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক ড. মো. আতাউল গণি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী সততা ও আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ তদারকি করা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, এখনও পর্যন্ত কোনো অনিয়মের খবর পাওয়া যায়নি। কোথাও কোনো নিম্ন মানের সামগ্রী ব্যবহার করা হলে সেগুলো অপসারণ করে মানসম্মত সামগ্রী ব্যবহারের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। যারা প্রকৃতভাবে ঘর পাওয়ার যোগ্য তাদের মাঝেই ঘর বিতরণ করা হবে।
আরিফ উর রহমান টগর/এসএমএম/এমআরএম