শিক্ষকের সামনে ছাত্রীকে...


প্রকাশিত: ০১:৪৬ পিএম, ১৪ নভেম্বর ২০১৫

নরসিংদীর মনোহরদীতে প্রেম প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় নবম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে শিক্ষকের সামনে মারপিট করেছে বখাটেরা। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় ওই স্কুলছাত্রীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় স্কুলছাত্রীর মা বাদী হয়ে বখাটে সজিব মিয়ার নামে মামলা দায়ের করেন।

পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতারের পর শনিবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে নরসিংদী জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। বৃহস্পতিবার মনোহরদী উপজেলার নোয়াকান্দী হাজী আলিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের বারান্দায় এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার লেবুতলা ইউনিয়নের তারাকান্দী গ্রামের মো. রুহুল আমিনের বখাটে ছেলে মো. সজিব মিয়া। প্রায় দুই বছর যাবতি এক স্কুলছাত্রীকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছেন। কিন্তু বখাটে সজিবের প্রস্তাবে রাজি হয়নি স্কুলছাত্রী। এরপর পিছু ছাড়েনি সজিব।

টানা দুই বছর যাবত স্কুলে আসা যাওয়ার পথে তাকে উত্ত্যক্ত করতো সজিব। কাজ না হওয়ায় নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাতে শুরু করেন সাজিব। এতেও কাজ না হওয়ায় বখাটে সজিব স্কুলছাত্রীকে দেখে নেয়ার হুমকি দেন। এরই মধ্যে গত বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে স্কুলছাত্রী নোয়াকান্দী হাজ্বী আলিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের গণিত শিক্ষক মো. সবুজ মিয়ার নিকট কোচিংয়ে পড়তে যান।

সকাল সাড়ে ৮টার দিকে শ্রেণি কক্ষে পাঠদান চলাকালে বখাটে সজিব তার দুই সহযোগীকে নিয়ে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়। এ সময় গণিত শিক্ষক সাইফুল ইসলাম সবুজ মিয়া ও অন্যান্য শিক্ষার্থীর সামনে থেকে স্কুলছাত্রীকে ডেকে বারান্দায় নিয়ে আসেন।

কোনো কিছু বুঝে উঠার আগেই সজিব ধারালো অস্ত্র দিয়ে স্কুলছাত্রীর পেটে এলোপাতাড়িভাবে কোপাতে থাকে। পরে তার আত্মচিৎকারে শ্রেণি কক্ষ থেকে অন্যান্য শিক্ষার্থীরা এগিয়ে আসলে বখাটেরা পালিয়ে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে মনোহরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় স্কুলছাত্রীর মা ইভটিজিং অভিযোগে থানায় মামলা দায়ের করেন।

স্কুলছাত্রীর বড় বোন বলেন, তার অবস্থা ভালো না। সে এখনো হাসপাতালে ভর্তি। এ বিষয়ে তথ্য দিতে আপত্তি জানান তিনি।

বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মো. জাকির হোসেন বলেন, গণিত শিক্ষক সবুজ মিয়াকে কোচিংয়ে না আসতে একাধিক বার নিষেধ করা হয়েছে। কিন্তু সে শোনেনি। সকাল বেলা প্রাইভেট না পড়তে আসলে হয়তো এ ঘটনা ঘটতো না। ঘটনার পরপর অভিযুক্ত সজিব মিয়াকে গ্রেফতারের সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হয়েছে।

এদিকে, স্কুলছাত্রীর উপর হামলার পর পর নিজের পিঠ বাঁচাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন স্কুলের গণিত শিক্ষক সাইফুল ইসলাম সবুজ। কোচিং বন্ধ হয়ে যাওয়ার ভয়ে ঘটনা ধামাচাপা চেষ্টা করছেন তিনি।

জানতে চাইলে গণিত শিক্ষক সাইফুল ইসলাম সবুজ বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, স্কুলে এ রকম কোনো ঘটনা ঘটেনি। কোচিং প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সারা বাংলাদেশে স্কুলগুলোতে কোচিং করানো হচ্ছে। সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ১৫০ টাকা করে ৪০ জন শিক্ষার্থীকে কোচিং করানো যায়।    

মনোহরদী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমঙ্গীর হোসেন বলেন, ছেলেটি বখাটে এবং অত্যন্ত খারাপ প্রকৃতির। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনার মূল নায়ক সজিব মিয়াকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।   

সঞ্জিত সাহা/এআরএ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।