ইসলামী আন্দোলনের নেতার বিরুদ্ধে সরকারি গাছ কাটার অভিযোগ
বগুড়ার শেরপুরে সরকারি স্কুলের গাছ কাটার অভিযোগ উঠেছে আহসান হাবিব নামে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের এক স্থানীয় নেতার বিরুদ্ধে। তিনি উপজেলার জোরগাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গাছগুলো নিজের দাবি করে বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) থেকে শুক্রবার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুর পর্যন্ত কাটেন।
আহসান হাবিব উপজেলার সুঘাট ইউনিয়ন শাখার ইসলামী আন্দোলনের সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া উপজেলার জোরগাছা গ্রামের বাসিন্দা এই নেতা আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দলের মনোনীত প্রার্থী।
ওই বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা গোলাম রব্বানী বলেন, ১৯৯০ সালে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে সরকারিভাবে ১০০টি বিভিন্ন প্রজাতির ফলজ-বনজ গাছ রোপণের জন্য দেয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় এই বিদ্যালয়টিতেও ওই পরিমাণ গাছ লাগানো হয়। বর্তমানে গাছগুলো বেশ বড় ও দামি হয়েছে।
কিন্তু জোরগাছা গ্রামের আহসান হাবিব ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে বিদ্যালয়ের সরকারি গাছগুলো কাটা শুরু করেছেন। কাউকে তোয়াক্কা করছেন না তিনি। মানছেন না কোনো নিয়ম। তার কাছে আমরা সবাই অসহায় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
জোরগাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাজমা খাতুন বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে স্কুল বন্ধ। আর এই সুযোগে বিদ্যালয়ের গাছ কেটে নেওয়ার পাঁয়তারা চালাচ্ছেন ওই ব্যক্তি।
তিনি আরও বলেন, ঘটনার দিন উপবৃত্তির কাজে স্কুলে এসে একটি গাছ কাটা দেখতে পাই। এছাড়া অন্য গাছগুলো কাটার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন আহসান হাবিবের নেতৃত্বে শ্রমিকরা। পরে তাৎক্ষণিক উপজেলা শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানাই। পাশাপাশি বিদ্যালয়ের সভাপতিকেও জানানো হয়।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের সভাপতি আরিফুল ইসলাম বলেন, গাছ কাটার বিষয়টি জানার পর স্কুলে এসে তাকে নিষেধ করা হয়। কিন্তু ইসলামী আন্দোলনের নেতা আহসান হাবিব কোনো কথাই মানতে নারাজ। এমনকি উল্টো আমাকেই নানা হুমকি-ধামকি দেন তিনি।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মিনা পারভীন বলেন, গাছ কাটার বিষয়টি জানার পর ইউএনও স্যারের সঙ্গে পরামর্শ করে গাছ কাটা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করে আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আহসান হাবিব বলেন, স্কুলের সাথেই আমার জমি। গাছগুলোর মালিকও আমি। কিন্তু জমির আইলে গাছ থাকার কারণে ফসল উৎপাদন কম হচ্ছে। তাই গাছগুলো কেটে নেয়ার উদ্যোগ নিই। কিন্তু উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে বাধাপ্রাপ্ত হওয়ায় গাছ কাটা আপাতত বন্ধ রাখতে হয়েছে।
এমআরআর/জেআইএম