ফেরির অপেক্ষায় ১২ ঘণ্টা!
সন্ধ্যায় সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ থেকে গাজীপুরের উদ্দেশে পরিবহনে উঠেছেন বশির আহমেদ কাজল। স্বাভাবিক ভাবে ভোরের আলো ফোটার আগেই গাজীপুর পৌঁছানোর কথা তার। কিন্তু ঘন কুয়াশায় পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ঘাটে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়তে হয়েছে তাকে। ফেরীর জন্য প্রায় ১২ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে তাকে।
বশির আহমেদ কাজলের মতো হাজারো যাত্রী ফেরি পারাপারে এই দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। দীর্ঘ সময় আটকে থাকায় স্বাস্থ্যকর খাবার সঙ্কট ও প্রাকৃতিক কাজের যথেষ্ট জায়গা না থাকায় দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।
এদিকে ফেরি পারাপার হতে না পারায় অনেককেই বাড়ি ফিরে যেতে দেখা গেছে। ঘাট কর্তৃপক্ষ সকাল পৌনে ১০টা থেকে ফেরি চলাচল শুরু করলেও এখনও স্বাভাবিক হয়নি পারাপার।
ঈগল পরিবহনের যাত্রী মামুনুর রশিদ জানান, তিনি গত রাত ১২টা থেকে দৌলতদিয়া ঘাটে ফেরি পারাপারের অপেক্ষা করছেন। ফেরি পারাপার হতে না পারায় রাতভর তীব্র শীতে ১০ মাসের শিশু নিয়ে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে তাকে। নারীদের টয়লেটের নির্দিষ্ট কোনো জায়গা না থাকার বিষয়টিও উল্লেখ করেন তিনি।
বেনাপোল থেকে পরিবারসহ ঢাকায় ফিরছিলেন ব্যাংক কর্মকর্তা সাদেকুল ইসলাম।
তিনি বলেন, সেই রাত থেকে স্ত্রী-সন্তানসহ ফেরি পারাপারের অপেক্ষা করছেন। সকালে তার ব্যাংকে কাজে যোগ দেয়ার কথা। কিন্তু ঘন কুয়াশায় ফেরি পারাপার হতে না পেরে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টাতেও ঘাটে অপেক্ষা করছেন।
অপর যাত্রী আমিনুল হক জানান, দীর্ঘ সময়ে ফেরি পার হতে না পেরে অনেকটা ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। বছরের প্রায় সময় ফেরি স্বল্পতাসহ নানা ধরনের সমস্যায় দুর্ভোগ পোহাতে হয়। শীতে দুর্ভোগের মাত্রা থাকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে। দুর্ভোগ লাঘবে সরকারের কাছে এ নদীর ওপর দ্রুত একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানান তিনি।
সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে মোটর পার্টস ব্যবসায়ী মমিনুল হক জানান, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যোগাযোগের অন্যতম ও গুরুত্বপূর্ণ এ পথে প্রায়ই দুর্ভোগ পোহাতে হয় তাদের। দুর্ভোগ মাঝে মধ্যে মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। পদ্মা নদীর ওপর দ্বিতীয় একটি সেতু নির্মাণ হলে এ অঞ্চলের সাধারণ মানুষের আর্থ সামাজিক উন্নয়নসহ ব্যবসায়িক খাতে ব্যাপক গতি আসবে বলে তার বিশ্বাস।
এফএ/জেআইএম