ডিসেম্বরের শেষে উত্তরে দুটি শৈত্যপ্রবাহ
চলতি ডিসেম্বরেই এক থেকে দুটি মৃদু অথবা মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ আসছে উত্তরাঞ্চলে। ওই সময় তাপমাত্রার পারদ নামতে পারে ১০ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। আগামী জানুয়ারিতে বাড়বে শীতের তীব্রতা।
জানুয়ারিতে আরও অন্তত দুই থেকে তিনটি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে এই অঞ্চলে। এরমধ্যে অন্তত দুটি শৈত্যপ্রবাহে রূপ নিতে পারে তীব্র। তাপমাত্রা নামতে পারে ৪ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
ঢাকা আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, চলতি ডিসেম্বরের শেষার্ধ্বে দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে এক থেকে দুটি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। ওইসময় তাপমাত্রা নামতে পারে ১০ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। সঙ্গে পড়বে হালকা থেকে মাঝারি কুয়াশা।
আগামী জানুয়ারিতে দুই থেকে তিনটি মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। এরমধ্যে অন্তত দুটি শৈত্যপ্রবাহ রূপ নেবে তীব্র। ওই সময় তাপমাত্রা ৬ থেকে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামবে। পুরো অঞ্চল ঢাকা পড়তে পারে ঘন কুয়াশায়।
রাজশাহী আবহাওয়া দফতরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রহিদুল ইসলাম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
রাজশাহী আবহাওয়া দফতরের উচ্চ পর্যবেক্ষক আবদুুস সালাম জানান, শনিবার (৫ ডিসেম্বর) রাজশাহীতে দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৪ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দুপুর ১২টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে ২৩ নভেম্বর রাজশাহীতে মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া দফতার আরও জানায়, শনিবার বদলগাছিতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৪ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া বগুড়ায় ১৬ দশমিক ৩, তাড়াশে ১৪ দশমিক ৪, ঈশ্বরদীতে রেকর্ড করা হয়েছে ১৪ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এদিকে, আসন্ন শৈত্যপ্রবাহে দুর্ভোগ বাড়তে পারে এই অঞ্চলের ছিন্নমূল ও নিম্নআয়ের মানুষের। করোনা মহামারি আরও সংকটে ফেলতে পারে মানুষজনকে। তবে পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিশেষ সর্তকতা থাকছে সংশ্লিষ্ট দফতর।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক শামছুল হক জানান, শৈত্যপ্রবাহের সঙ্গে কুয়াশা থাকলে আলু ও বোরো বীজতলার ক্ষতি হতে পারে। আলুখেত রক্ষায় আগাম ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করতে হবে। আর সাদা পলিথিন দিয়ে বোরো বীজতলা ঢেকে দিতে হবে। এই সমস্যা প্রতি বছরই দেখা দেয়। আগাম তথ্য দিয়ে বিষয়টি কৃষকদের জানানো হয়েছে।
শীত মোকাবিলায় সরকারের প্রস্তুতি যথেষ্ট বলে জানিয়েছেন জেলা ত্রাণ ও পূর্নবাসন কর্মকর্তা আমিনুল হক। তিনি বলেন, ‘এরইমধ্যে জেলার ৯ উপজেলায় ৫৪ হাজার ৫০০ শীতবস্ত্র বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে শীতবস্ত্র কেনার জন্য আরও ছয় লাখ টাকা করে নগদ অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।’
আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে অসহায়-দুস্থ মানুষজন এসব সহায়তা পাবেন। সংকট মোকাবিলায় আগামীতে আরও সহায়তা আসবে। সেগুলো পর্যায়ক্রমে বিতরণ করা হবে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
করোনা এবং শৈত্যপ্রবাহ মোকাবিলায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল। হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস জানিয়েছেন, এরইমধ্যে পুরো হাসপাতালের ওয়ার্ডগুলোর করিডোর পর্দায় ঢেকে দেয়া হয়েছে। পর্যাপ্ত ওষুধ ও ইনহেলার মজুত করা হয়েছে।
করোনা মহামারির কথা মাথায় রেখে হাসপাতালে পর্যাপ্ত অক্সিজেন সিলিন্ডার মজুত করা হয়েছে। নতুন আরেককটি অক্সিজেন প্ল্যান্ট বসানোর কাজ চলছে। চিকিৎসকদের জন্য পর্যাপ্ত সুরক্ষাসামগ্রী এবং রোগীদের জন্য ওষুধ মজুত রয়েছে। পরিস্থিতি বুঝে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
ফেরদৌস সিদ্দিকী/এসআর/এমএস