পণ্য আটকের প্রতিবাদে বেনাপোলে সড়ক অবরোধ


প্রকাশিত: ০২:৫৫ পিএম, ০৯ নভেম্বর ২০১৫

বৈধ পথে আমদানিকৃত পণ্য অবৈধভাবে আটক ও হয়রানির প্রতিবাদে যশোর-বেনাপোল সড়ক অবরোধ করেছে স্থানীয় বন্দর ব্যবহারকারী বিভিন্ন সংগঠন। সোমবার দুপুর ২টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত বেনাপোল কাস্টমস হাউজের সামনের সড়কে বিভিন্ন যানবাহন দিয়ে অবরোধ করে ব্যবসায়ীরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার আমদানিকারক আনান ট্রেড সেন্টার ও তানজিম এন্টারপ্রাইজ নামে দুইটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ভারত থেকে ২৬৭ প্যাকেজ ভারতীয় ফেব্রিক্সস, থান কাপড়, সিনথেটিক কাপড়, প্রিন্ট থান, শাটিং থান আমদানি করেন। আমদানিকৃত পণ্য চালান পরীক্ষা শেষে সরকারি শুল্ক পরিশোধ করে গত ৪ অক্টোবর বিকেলে বন্দর থেকে দুইটি ট্রাকে (যশোর-ট-১১-০৮১৭ ও কুষ্টিয়া-ট-১১-০২৮৮) লোড দিয়ে ঢাকায় যাওয়ার পথে বেনাপোল বাজার থেকে বিজিবি সদস্যরা আটক করে যশোর ব্যাটালিয়নে নিয়ে যান।

পাঁচ দিন পর সোমবার সকালে ট্রাকে করে ওই পণ্য মালিকবিহীন ও শুল্ক ফাঁকির অভিযোগে বেনাপোল কাস্টমে জমা দিতে আসে বিজিবি। এ সময় সিজার লিস্টের শুল্ক ফাঁকির বিষয়ে কাস্টম কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মতনৈক্য দেখা দিলে বিজিবি পুনরায় ওই পণ্য যশোর নিয়ে যেতে চায়। এ খবর পেয়ে বেনাপোলের বন্দর ব্যবহারকারী সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টসহ বিভিন্ন সংগঠন প্রতিবাদ জানায়। তাদের দাবি পণ্য এখানেই দেখতে হবে।

এ নিয়ে বিজিবি ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে কথাকাটা কাটির এক পর্যায়ে ব্যবসায়ীরা সড়ক অবরোধ করে রাখে। এ সময় সড়কের দুই পাশে শত শত পণ্য বোঝাই ট্রাক আটকা পড়ে থাকে। খবর পেয়ে পোর্ট থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে সাধারণ মানুষের চলাচলের ব্যবস্থা করলেও বড় কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারেনি। পরে বিকেল ৫টার দিকে বিজিবির যশোর ব্যাটালিয়নের কর্মকর্তা ও কাস্টম কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠক শেষে জানানো হয় বেনাপোলে আটক পণ্য পুণঃপরীক্ষা করা হবে।

বেনাপোল কাস্টম কমিশনার সিদ্ধান্ত জানালে বন্দর ব্যবহারীরা বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে অবরোধ তুলে নেন।  

যশোর-২৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, শুল্ক ফাঁকি দিয়ে মিথ্যা ঘোষণায় ভারত থেকে বস্ত্রের চালান আমদানির অভিযোগে আমড়াখালি চেকপোস্ট থেকে দুই ট্রাক পণ্য আটক করা হয়। এর মধ্যে ভারতীয় শাড়ি, ফেব্রিক্স, থান কাপড়, সিনথেটিক কাপড়, সুতি প্রিন্ট থান, শাটিং থান কাপড় রয়েছে।

তিনি দাবি করেন, থান কাপড়ের ঘোষণা দিয়ে আমদানি করা হয় শাড়ি ও শার্টের কাপড়। যে পণ্য চালানটিতে মোটা অঙ্কের শুল্ক ফাঁকি দেয়া হচ্ছিল। আটককৃত মালামালের মূল্য ৬ কোটি ৭৫ হাজার টাকা। এই পণ্য চালান বেনাপোলে জমা দিতে যাওয়ার পর অবরোধের ঘটনা ঘটে।

এই পণ্য চালানের বেনাপোল বন্দরের সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী সোহান ট্রেড সেন্টারের সত্ত্বাধিকারী আহসান হাবিব সেলিম জানান, আমদানিকারক বৈধ পথে পণ্য আমদানি করা হয়েছে। কাস্টম কতৃপক্ষের ধার্যকৃত শুল্ক পরিশোধ করে পণ্য ছাড় নিয়ে ঢাকায় পাঠানোর সময় বিজিবি সদস্যরা ট্রাক দুইটি আটক করে বিজিবি ব্যাটালিয়নে নিয়ে যায়। বৈধ মালামাল অবৈধ ও শুল্ক ফাঁকির কথা বলে বেনাপোলে জমা দিতে এলে কাস্টম তা গ্রহণ না করায় পুনরায় যশোর নিতে গেলে ব্যবসায়ীরা হয়রানির প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করে রাখে। পরে সমঝোতা হলে অবরোধ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র সহ-সভাপতি আলহাজ্ব নুরুজ্জামান জানান, বিজিবি সদস্যরা আমদানি নীতিমালার প্রতি শ্রদ্ধা না রেখে অন্যায়ভাবে প্রতিনিয়ত এভাবে বৈধ আমদানিকারকদের পণ্য আটকে হয়রানি করে আসছে। বারবার বলার পরও এর কোনো প্রতিকার হচ্ছে না। বিজিবির হয়রানির প্রতিবাদে ব্যবসায়ীরা সড়ক অবরোধ করে বলেও জানান তিনি।

জামাল হোসেন/এআরএ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।