ভাষাসৈনিক জাহিদ হোসেন মুসা আর নেই
ঝিনাইদহের প্রবীণ রাজনীতিবিদ, সমাজসেবক, শিক্ষানুরাগী ও ভাষাসৈনিক মো. জাহিদ হোসেন মুসা মিয়া ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
মঙ্গলবার (১৭ নভেম্বর) দুপুর ২টা ৪৫ মিনিটে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে (অ্যাপোলো হাসপাতাল) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর।
সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বাদ এশা ধানমন্ডির ঈদগাহ মসজিদে তার প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। মরহুমের দ্বিতীয় জানাজা বুধবার (১৮ নভেম্বর) ঝিনাইদহ ওয়াজির আলী হাইস্কুল মাঠে বাদ জোহর অনুষ্ঠিত হবে। জানাজা শেষে তার মরদেহ মহিষাকুণ্ডু গ্রামের বটতলায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।
গত ১৩ অক্টোবর বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতার কারণে জাহিদ হোসেন মুসাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, ৬ ছেলে, এক মেয়ে এবং নাতি-নাতনি রেখে গেছেন। তার জ্যেষ্ঠপুত্র মো. নাসের শাহরিয়ার জাহেদী রেডিয়েন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান। জাহিদ হোসেন মুসা রেডিয়েন্ট গ্রুপ অব কোম্পানিজ ও সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকালের উপদেষ্টা ছিলেন।
বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা জাহিদ হোসেন মুসা মিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
জাহিদ হোসেন মুসা ১৯৩২ সালের ২ ফেব্রুয়ারি নানার বাড়ি তৎকালীন যশোর জেলার ঝিনাইদহ (বর্তমানে জেলা) মহকুমার কালীগঞ্জের পাইকপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর এই রাজনৈতিক সহচর দীর্ঘ সময় ঢাকা ও কলকাতায় কাটিয়েছেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের আগ থেকে ঝিনাইদহের নারিকেলবাড়িয়ায় তার পৈতৃক বাড়িতে অসংখ্য গুণী রাজনীতিবিদের আগমন ঘটেছে। বিশেষত মাওলানা ভাসানী ঝিনাইদহে গিয়ে তার বাড়িতেই থাকতেন। সে সময়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গেও তার সুসম্পর্ক ছিল। প্রবীণ এই রাজনীতিক মাওলানা ভাসানীর নির্দেশে ১৯৭৩ ঝিনাইদহ মহকুমার ন্যাপ সভাপতির দায়িত্বে থাকাকালীন ঝিনাইদহ থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। রাজনৈতিক জীবনে ১৯৫৫-৫৭ পর্যন্ত ঝিনাইদহ মহকুমা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির সাথে যুক্ত ছিলেন তিনি। জাহিদ হোসেন মুসা অসংখ্য গান ও কবিতা রচনা করেছেন। তার প্রকাশিত গ্রন্থের নাম ‘অনেক দেরিতে’।
আব্দুল্লাহ আল মাসুদ/এমএসএইচ/এমএস