তিন সপ্তাহেও খোঁজ মেলেনি ভ্যানচালক আনিছের

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি কুষ্টিয়া
প্রকাশিত: ১০:৫৮ এএম, ১৭ নভেম্বর ২০২০

কুষ্টিয়া মিরপুরে পৌর এলাকার সুলতানপুর গ্রামের দরিদ্র ভ্যানচালক আনিছ (১৫)। গত ২২ অক্টোবর সকালে নিজ বাড়ি থেকে কাজে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়। পরদিন সকালে পার্শ্ববর্তী ভেড়ামারা উপজেলার বিত্তিপাড়া গ্রামের স্কুল চত্বর থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় ভ্যানটি উদ্ধার হলেও আজ পর্যন্ত নিখোঁজ আনিছের কোনো সন্ধান পায়নি তার পরিবার।

এ ঘটনায় মা দোলেনা খাতুন মিরপুর থানায় সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করেছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত তার খোঁজ দিতে পারেনি পুলিশ। এতে চরম দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে আনিসের পরিবারের সদস্যদের। তবে নিখোঁজ আনিছের সন্ধানে প্রযুক্তিগত প্রক্রিয়াসহ সবরকম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে দাবি করেছে পুলিশ।

এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মানসিক ও শারীরিক প্রতিবন্ধী বাবা তোজুল ও মা দোলেনা খাতুন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম কিশোর ভ্যানচালক আনিছ। শেষ সম্বল বাড়ির গাছ বিক্রি ও এনজিও থেকে নেয়া ঋণের টাকায় ভ্যানটি কেনা হয়। এতে কোনোভাবে চলে যাচ্ছিল পরিবার। এখন সেই অবলম্বনটুকুও হারিয়েছে পরিবারটি।

মা মোছা. দোলেনা খাতুনের অভিযোগ, ঘটনার দিন নিজেরাই সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজ করে ছেলের কোনো সন্ধান না পেয়ে রাতেই মিরপুর থানায় গিয়েছিলেন পুলিশের কাছে। পুলিশ তখন জানিয়েছিল, এত রাতে আমরা কোথায় খোঁজ করব? সকালে আসেন, আপনার জিডি নেয়া হবে। পরদিন সকালে পরিত্যক্ত অবস্থায় ভ্যানটি পাওয়ার পর পুলিশ জিডি নিয়েছে। কিন্তু এখনো আনিছের কোনো খোঁজ পায়নি পুলিশ।

আনিছের প্রতিবন্ধী বাবা তোজুল ইসলাম বলেন, আপনারা আমার ছেলেকে খুঁজে দেন। আমার ছেলেকে দেখতে চাই।

ভেড়ামারা উপজেলার বিত্তিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চত্বরে পরিত্যক্ত ভ্যানটি উদ্ধার ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী দোকানি সান্টু রায়হান। তিনি বলেন, ‘গত ২২ অক্টোবর সন্ধ্যায় কে বা কারা ভ্যানটি বিত্তিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চত্বরে রেখে চলে যায়। প্রথমে কিছু বুঝে উঠতে পারিনি। পরে যখন দেখি ভ্যানটি আর কেউ নিতে আসছে না, তখন বিষয়টি স্থানীয় ইউপি সদস্য ও সংশ্লিষ্ট ভেড়ামারা থানা পুলিশকে জানাই। পরে থানা থেকে পুলিশ এসে ভ্যানটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।’

মিরপুর উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি ও কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের সদস্য হাজি মোহাম্মদ আলী জোয়ার্দার বলেন, ‘অনেক সময় পুলিশ প্রশাসন তুলনামূলক অতি ঠুনকো বিষয়ে হৈ-হুল্লোড় করে যেভাবে সাড়া ফেলে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দেয়, এক্ষেত্রে নিখোঁজ আনিছকে উদ্ধারে তাদের ভূমিকা ও কর্তব্যপরায়ণতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।’

মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) পুলিশ পরিদর্শক সঞ্জয় কুমার কুন্ডু বলেন, ‘গত ২২ অক্টোবর পাকিভ্যানচালক আনিছ সকালে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে আর ফিরে না আসায় তার পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। ঘটনার একদিন পর ভ্যানটি পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা গেলেও এখনও এ ঘটনায় কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। তবে নিখোঁজ আনিছের সন্ধান বের করতে প্রযুক্তিগত পদ্ধতি ব্যবহারসহ সবরকম চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে দাবি করেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।

আল-মামুন সাগর/এসআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।