ছাত্রলীগ নেতার প্রাইভেটকারে আগুন দিল কে? জানতে তদন্তে পুলিশ
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় গোসিংগা এলাকার আব্দুল মোতালেব খানের বাড়িতে থাকা গাড়ির গ্যারেজে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আগুনে গ্যারেজ ও গ্যারেজে থাকা একটি প্রাইভেটকার পুড়ে গেছে।
সোমবার (১৬ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, গাড়িটি গোসিংগা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি শাকিল খানের। বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।
গোসিংগা ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রাজু শেখ জানান, আব্দুল মোতালেব খানের ছোট ছেলে গোসিংগা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি শাকিল খান ও তার বড় ছেলে একই ইউনিয়নের যুবলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. শরীফ খান সৌদি প্রবাসী। শাকিল খান তার পরিবারের ব্যবহারের জন্য তার বাবার নামে ওই গাড়িটি কেনেন। তার বাবা এলাকায় বড় ছেলের নাতি ও স্ত্রীকে নিয়ে একই উপজেলার সিংঘারদিঘী এলাকায় বসবাস করেন। শরীফ খানের স্ত্রী সন্তানসম্ভবা হওয়ায় কাপাসিয়ায় তার বাবার বাড়িতে অবস্থান করছেন। বাড়িটি শুধু কেয়ারটেকার মনির হোসেন দেখভাল করেন।
মনির দিনভর অটোরিকশা চালান। রাতে বাসায় ফেরেন। প্রয়োজনের সময় গাড়িটি পরিবারের লোকজন ব্যবহার করেন। চালক মো. কাউসার সোমবার দুপুরে গাড়িটি ধুয়েমুছে গ্যারেজে রেখে গ্যারেজে তালা আটকে তার নিজের বাড়ি স্থানীয় পেলাইদ এলাকায় চলে যান। প্রতিবেশীরা রাত ৮টার দিকে দাউ দাউ করে গ্যারেজে আগুন জ্বলতে দেখে এগিয়ে যায় এবং স্থানীয় ফায়ার স্টেশনে খবর দেয়। শ্রীপুর ফায়ার সার্ভিসের লোকজন ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই এলাকাবাসী আগুন নিভিয়ে ফেলে। এ সময় ওই বাড়িতে কেয়ারটেকারও ছিলেন না।
সৌদি প্রবাসী মো. শরীফ খান ফোনে জানান, আমরা দুই ভাই সৌদি আরব থেকে ব্যবসা করি। নয় মাস দেশে থাকলে তিন মাস সৌদি থাকি। করোনা মহামারির জন্য এবার দেশে ফেরা হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে শ্রীপুর উপজেলা চেয়ারম্যান সামছুল আলম প্রধানের আত্মীয় আজিজ ফকিরদের সঙ্গে জমিজমা নিয়ে আমাদের বিরোধ চলছে। গত উপজেলা নির্বাচনে সামছুল আলম প্রধানের নির্বাচনী কাজে অংশ না নেয়ায় তার সঙ্গেও বিরোধ সৃষ্টি হয়। উভয়ের সঙ্গে বিরোধিতার জেরে প্রায় এক মাস আগে তাদের লোকজন আমার জমির সীমানা প্রাচীর ভেঙে দেয়। শরীফ খানের ধারণা, এই অগ্নিকাণ্ডের পেছনে সামছুল আলম প্রধান ও আজিজ ফকিরের লোকজনদের হাত রয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করে শ্রীপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সামছুল আলম প্রধান বলেন, ‘ওই অগ্নিকাণ্ডের পেছনে তার ও আজিজ ফকিরের লোকজনদের কোনো হাত নেই। যে জমি নিয়ে বিরোধের কথা বলা হয়েছে তার প্রকৃত মালিক মৃত আজিজ ফকির ও গংদের। ওই জমি নিয়ে আদালতে মামলা চলাকালে আজিজ ফকির মারা যান। শরীফ খান ও শাকিল খানরা ওই জমি দখলে নেয়ার জন্য বিভিন্নভাবে আজিজ ফকির সন্তানদের বিরুদ্ধে উল্টো চাঁদাবাজি মামলা দিয়ে হয়রানি করছেন।’
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খোন্দকার ইমাম হোসেন জানান, বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তে শেষ হওয়ার আগে কিছু বলা যাচ্ছে না।
শ্রীপুর ফায়ার স্টেশনের ওয়্যারহাউস ইন্সপেক্টর মীর রাজউদ্দিন জানান, এটি নাশকতা নাকি দুর্ঘটনা তাৎক্ষণিকভাবে বলা যাচ্ছে না।
শিহাব খান/এসআর/জেআইএম