পাবনায় তুচ্ছ ঘটনার জেরে সংঘর্ষ, একজন গুলিবিদ্ধসহ আহত ২১
পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার আফরা গ্রামে জমির আইল নিয়ে দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে একজন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ২১ জন আহত হয়েছেন। আহতদের বিভিন্ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
রোববার (১৫ নভেম্বর) দুপুরে নেকবার আলী ও কাজী লাল অনুসারীদের মধ্যে এই সংঘর্ষ বাধে। পরে দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে। ঘটনাস্থল থেকে দুই পক্ষের দুজনকে আটক করেছে পুলিশ।
সংঘর্ষে আহতরা হলেন- নেকবার আলীর পক্ষের আফড়া গ্রামের আব্দুল আওয়ালের ছেলে আরিফ (গুলিবিদ্ধ), বেলাল, জলিল, রহমান, ওসমান, সুরাই, ইমদাদুল, নেকবার, আলিমুদ্দিন, নজরুল, আলতাব, মাইদুল, জাহাঙ্গীর, সোহেল, আবুল, একরাম, রেহেনা। কাজী লাল পক্ষের আহতরা হলেন-কাজী লাল, আরিফ, জমিন ও তোফাজ্জল হোসেন।
আহতদের সাঁথিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, বেড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পাবনা জেনারেল হাসপাতাল ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ জানায়, সাঁথিয়া উপজেলার করমজা ইউনিয়নের আফড়া গ্রামের নেকবার ও কাজী লাল পক্ষের মধ্যে জমিজমা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এরই মধ্যে শুক্রবার (১৩ নভেম্বর) নেকবার পক্ষের এমদাদুল হক গ্রামের মাঠে জমি চাষ করতে যান। সেখানে জমির আইল (সীমানা) নিয়ে কাজী লাল পক্ষের কালু মেম্বারের সঙ্গে এমদাদুল হকের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে এমদাদুলকে প্রতিপক্ষের লোকজন ধাওয়া করে মাঠছাড়া করে।
এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে শনিবার পর্যন্ত দফায় দফায় ধাওয়া, পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এরই জের ধরে রোববার (১৫ নভেম্বর) দুুপরে নেকবার পক্ষের লোকজন একত্র হয়ে মাঠে যায়। এ খবর পেয়ে কাজী লাল পক্ষের লোকজনও সংগঠিত হয়ে মাঠে যায়। কাজী লাল পক্ষের হামলায় এক পর্যায়ে নেকবার পক্ষের লোকজনের পিছু হটে যায়। এ সুযোগে কাজী লালের লোকজন প্রতিপক্ষের লোকজনের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হামলা চালায়। এ সময় হামলাকারীরা কমপক্ষে ৫-৬টি বাড়িতে ভাংচুর ও লুটপাট করে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
হামলাকারীরা বেলাল, জলিল, সোবহান, আয়ুব আলী, ইসলাম, আজিত, মোহাম্মদ আলীর বাড়ি ভাংচুর করে। নেকবার পক্ষের বেলালের স্ত্রী সাথী খাতুন জানান, হামলাকারীরা নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার ও ঘরের আসবাবপত্র লুটপাট করে নিয়ে যায়।
সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান জানান, দফায় দফায় সংঘর্ষের সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে দু’দফায় পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গুলির খোসা উদ্ধার করেছে। এ ঘটনায় সাঁথিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে কাজী লাল পক্ষের কালু মেম্বার ও নেকবারের পক্ষের বেলালকে আটক করেছে বলে তিনি জানান।
ওসি আরও জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (সন্ধ্যা ছয়টা) এলাকার পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে ও শান্ত রয়েছে।
আমিনুল ইসলাম/এসআর/এমকেএইচ