শরীয়তপুরে পান চাষিদের মুখে হাসির ঝিলিক
শরীয়তপুরে পানের বাম্পার ফলন হয়েছে। পান চাষিদের মুখে হাসির ঝিলিক ফুটে উঠেছে। পান চাষ এখন সোনালি স্বপ্নতে পরিণত হয়েছে। গত বছর দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া এবং অতিবৃষ্টির কারণে কৃষকরা পান চাষে ক্ষতির সম্মুখীন হলেও এবছর তা পুষিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছেন।
যদিও পান চাষ করতে যে সকল উপকরণ লাগে যেমন বাঁশ, পাটখড়ি, সুতা, ওলুবন, খৈর, টি.এস.পি, কীটনাশক ও সেচ দিতে খরচের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় কৃষকদের একটু কষ্ট হলেও তা তারা সহ্য করে নিয়েছেন।
শরীয়তপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, এ বছর ৪৭০ হেক্টর জমি পান চাষের জন্য লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল কিন্তু ৭০ হেক্টর বেশি অর্জিত হয়েছে। শরীয়তপুর জেলার পাঁচটি উপজেলাতেই কম বেশি পানের চাষ হয়। তার মধ্যে সদর উপজেলায় ৩৪ হেক্টর, নড়িয়া উপজেলায় ৩১ হেক্টর, ভেদরগঞ্জ উপজেলায় ৪৫ হেক্টর, ডামুড্যা উপজেলায় ১০ হেক্টর এবং গোসাইরহাট উপজেলায় ৩৫০ হেক্টর জমিতে পানের চাষ করা হয়।
সদর উপজেলার তুলাসার ইউনিয়নের বাইশ রশি গ্রামের পান চাষি মো. ইমান আলী বেপারী জাগো নিউজকে বলেন, এ বছর আমি এক একর করে দুইটি পানের বরজ করেছি। গত বছর বরজ করতে গিয়ে দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে অনেক লোকসান হয়েছে। এ বছর পানের ফলন ভালো হয়েছে। আশা করছি, গত বছরের লোকসান এ বছর পুষিয়ে নিতে পারবো।
একই উপজেলার বাঘিয়া গ্রামের পান চাষি কিবরিয়া বেপারী জাগো নিউজকে বলেন, এ বছর পানের ফলন ভালো হয়েছে। কিন্তু আমাদের উৎপাদিত পানের মান অনেক ভালো হওয়া সত্ত্বেও কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ভারত থেকে অল্পমূল্যে নিম্নমানের পান আমদানি করছেন। অথচ আমাদের উৎপাদিত পান বিদেশেও রফতানি হচ্ছে।
আরেক পান চাষি আ. আজিজ মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, পান চাষ করতে আমাদের অনেক খরচ হয়। এক একর জমিতে পান চাষ করতে পাঁচ লাখ টাকার উপরে খরচ হয়ে যায়। অথচ সরকারের কাছ থেকে আমরা কোনো সুযোগ সুবিধাই পাই না।
গোসাইরহাট উপজেলার পান চাষি মো. ফরিদ হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের দেশের উৎপাদিত পান বিশ্বের বহু দেশে রফতানি হয়। কিন্তু আমাদের দেশের কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী ভারত থেকে অল্প মূল্যে, নিম্নমানের পান আমদানি করে পানের বাজার নষ্ট করে দিচ্ছে।
একই উপজেলার পান চাষি বরকত আলী জাগো নিউজকে বলেন, আমরা গরিব কৃষক। পান চাষ করতে আমাদের অনেক খরচ হয়। কিন্তু বাংলদেশ কৃষি ব্যাংক এবং সোনালী ব্যাংক থেকে কখনোই কোনো ঋণ পাইনি। তাই কষ্ট করেই পান চাষ করছি। যাতে একটু ভালোভাবে থাকতে পারি।
এ ব্যাপারে শরীয়তপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. কবির হোসেনের সঙ্গে আলাপকালে তিনি জানান, এ বছর পানের আবাদ ভালো হয়েছে। গত বছর দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে কৃষকদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। এ বছর পান চাষিরা তা পুষিয়ে নিতে পারবেন।
মো. ছগির হোসেন/এমজেড/এমএস