দুই ছেলেকে নিয়ে ইউপি সদস্যকে পেটালেন চেয়ারম্যান

জাগো নিউজ ডেস্ক
জাগো নিউজ ডেস্ক জাগো নিউজ ডেস্ক বেনাপোল (যশোর)
প্রকাশিত: ০৯:১২ এএম, ২৮ অক্টোবর ২০২০

মাদক ব্যবসা ও সালিশের টাকা ভাগাভাগিকে কেন্দ্র করে ইউপি সদস্যকে পিটিয়েছেন যশোরের শার্শা উপজেলার সীমান্তবর্তী গোগা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ ও তার দুই ছেলে।

এ সময় গুরুতর আহত ইউপি সদস্য বাবুল হোসেনকে উদ্ধার করে স্থানীয়রা হাসপাতালে পাঠাতে চাইলেও তারা পাঠাতে দেননি। পরে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের হস্তক্ষেপে তাকে উদ্ধার করে যশোর কুইন্স হসপিটালে ভর্তি করা হয়।

এলাকাবাসী জানান, গোগা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ নিজেই শুধু চাঁদাবাজি, লুটপাট ও মাদক ব্যবসায় জড়িত নন তার ছেলে সম্রাট হোসেনও নানাবিধ অপকর্মে জড়িত। এসবের জের ধরেই মঙ্গলবার গোগা বাজারে এ মারপিটের ঘটনা ঘটেছে।

রশিদ চেয়ারম্যানের ছেলে সম্রাট হোসেনের সঙ্গে বাবুল মেম্বারের অপকর্মের টাকা ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে সম্পর্ক থাকলেও সম্রাট হোসেনের একটি ফেনসিডিলের চালান আটকের জের ধরে দুজনের মধ্যে সমস্যা চলছিল। ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডভুক্ত হরিশচন্দ্রপুর গ্রামের বিভিন্ন সালিশ, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন উৎস থেকে হাতিয়ে নেয়া টাকা বাবুল ও সম্রাটের মধ্যে ভাগ বাটোয়ারা হত। এ সকল অপকর্মে গ্রামবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে চেয়ারম্যান রশিদের কাছে বাবুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেও সম্রাটের বিরুদ্ধে কোনো কথা বলেননি।

অভিযোগ পেয়ে রশিদ চেয়ারম্যান বাবুলকে বিভিন্নভাবে নেয়া এক লাখ ৭৪ হাজার টাকা ফেরত দিতে বলেন। এ সময় বাবুল মেম্বার এসব অপকর্মে সম্রাটের সংশ্লিষ্টতার কথাও জানান। পরে চাপের মুখে তিনি এক লাখ টাকা ফেরত দিয়ে বাকি টাকা পরে দেবেন বলে জানান।

এদিকে নির্বাচনের আগে রশিদ চেয়ারম্যান বাবুল মেম্বারের কাছ থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা ধার করেছিলেন। বাবুল মেম্বার সেই টাকা ফেরত চান। এমনকি এই টাকার বিষয়টি তিনি স্থানীয় সংসদ সদস্য শেখ আফিল উদ্দিকেও অবহিত করেন।

jagonews24

সংসদ সদস্য রশিদ চেয়ারম্যানকে সেই টাকা ফেরত দিতে বলেন। এরপরই রশিদ চেয়ারম্যান ক্ষুব্ধ হয়ে বাবুলের সঙ্গে কথা কাটাকাটিতে জড়ান। এক পর্যায়ে তিনি ছেলে সম্রাটকে মোবাইল ফোনে বাজারে আসতে বলেন। সম্রাট তার আরেক ভাই সুমন হোসেনসহ বেশ কয়েকজনকে নিয়ে বাজারে আসেন।

এরপরই রশিদ চেয়ারম্যান নিজেই বাবুল মেম্বারকে শত শত লোকের সামনে চড় থাপ্পড় ও লাথি মারতে থাকেন। চেয়ারম্যানের ছেলে সম্রাট ও সুমনও সহযোগীদের নিয়ে হামলা চালান।

ঘটনা জানতে পেরে শার্শা উপজেলা আাওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থলে যান এবং স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে বিষয়টি আলোচনা করেন।

গোগা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন, ইউপি সদস্য তবিবার রহমান ও স্থানীয় লুৎফর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, রশিদ চেয়ারম্যানের ছেলে সম্রাট একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। তার নামে মাদক ব্যবসার মামলাও আছে শার্শা থানায়।

এ বিষয়ে চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, একটি ঘটনা ঘটেছে, তবে আমরা সেটা পরিষদে বসে মিটমাট করার চেষ্টা করছি।

এ ব্যাপারে শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বদরুল আলম বলেন, আমাদের কাছে এখনো কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

জামাল হোসেন/এফএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।