গ্রাম পুলিশ কছিম উদ্দিন এখন ভিক্ষুক
ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার ডোমঘাটা গ্রামের কছিম উদ্দিন দীর্ঘ ২৫ বছর গ্রাম পুলিশে চাকরি করেছেন। ব্যাঙ্গা চৌকিদার নামেও পরিচিত সবার কাছে। উপজেলার বাঘবেড় ইউনিয়ন পরিষদে চাকরি শেষে সংসার চালাতে এখন তিনি ভিক্ষা করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কছিম উদ্দিন ও তার স্ত্রী খাতুজান বিবি (৫৫) অনেকদিন যাবৎ হাপানী রোগে ভুগছেন। প্রতিদিন ৮০ থেকে ১০০ টাকার ঔষধ কিনতে হয় তার। গরিবদের জন্য সরকারি বরাদ্দের ১০ টাকা কেজি দরের যে চাল পান তা বিক্রি করেও ওষুধের খরচ জোগাতে পারেন না তিনি।
গ্রাম পুলিশে চাকরি করে দুই মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। আর ছেলে বিয়ে করে ঢাকায় চলে গেছেন। বাবা-মার খোঁজ নেন না ছেলে।
এলাকাবাসী জানান, সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে চাকরি করেছেন কছিম। চাকরি শেষে বেকার জীবনে দুটি গরু কিনে খেয়ে-পরে বাঁচার চেষ্টা করেছিলেন। তবে কছিম ও তার স্ত্রীর চিকিৎসার খরচ জোগাতে গরু দুটি বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন।
অনেক সময় উপজেলার মুন্সিরহাট বাজারের পাহারাদার হিসেবে কাজ করেছেন। এখন কোনো রকমে খেয়ে পরে বেঁচে থাকতে ভিক্ষা করছেন তিনি। অনেকে সাহায্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন।
কছিম উদ্দিন বলেন, আমার ৭ শতাংশ জায়গা রয়েছে। এছাড়া ধন-সম্পদ বলতে আর কিছুই নেই। থাকার জন্য মাটি দিয়ে একটি ঘর তৈরি করেছিলাম। এখন ঘরে থাকার মতো অবস্থা না থাকায় প্রতিবেশী আবুল কাশেমের বারান্দায় স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করছি। তিনি সকলের সহায়তাসহ সরকারিভাবে একটি ঘর তৈরি করে দেয়ার জন্য দাবি জানান।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আবু সাইদ জানান, অসহায় কছিম উদ্দিন আমার ওয়ার্ডের বাসিন্দা। তিনি মানবেতর জীবনযাপন করছেন। আর তাই আমি নিজেও তাকে মাঝে মাঝে কিছু টাকা দিয়ে সহযোগিতা করি।
বাঘবেড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফরহাদ রব্বানী সুমন বলেন, কছিম ছিলেন গ্রাম পুলিশের মধ্যে একজন নিবেদিত প্রাণ। আমি তাকে নিজের সাধ্যমতো সহযোগিতার চেষ্টা করছি ও করব।
এ বিষয়ে ধোবাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাফিকুজ্জামান বলেন, কছিম উদ্দিন ১০ টাকা কেজির চাল পাচ্ছেন। আশ্রয়ন প্রকল্পের আওতায় তাকে একটি ঘর করে দেয়ার ব্যাবস্থা করা হবে।
এফএ/এমকেএইচ