মসজিদে বিস্ফোরণের পর থেকে গ্যাস বন্ধ, লাকড়ি দিয়ে রান্না
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার পশ্চিম তল্লা বায়তুস সালাত জামে মসজিদে বিস্ফোরণের পর তল্লা এলাকাসহ আশপাশের বাসা-বাড়িতে গ্যাসলাইন বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এতে ৫০-৬০ হাজার মানুষের রান্না-বান্না প্রায় বন্ধ।
এ নিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন স্থানীয়রা। রোববার (০৬ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টা পর্যন্ত গ্যাসলাইন চালু করা হয়নি।
জানা যায়, মসজিদে বিস্ফোরণের পর গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি। তিনদিনেও গ্যাস সংযোগ দেয়া হয়নি। বাসাবাড়িতে গ্যাস না থাকায় লাকড়ি দিয়ে রান্নাবান্না সারছেন এলাকাবাসী।
এলাকাবাসী জানান, তল্লা এলাকাসহ আশপাশ মহল্লায় ৫০-৬০ হাজার মানুষের বসবাস। কোনোরকম মাইকিং, পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই তিনদিন ধরে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রেখেছে তিতাস। এ অবস্থায় বাধ্য হয়ে লাকড়ি ও খড়কুটো দিয়ে রান্নার কাজ সারছেন স্থানীয়রা।
তল্লা এলাকার বাসিন্দা আসমা বেগম জানান, তিনদিন ধরে গ্যাস নেই। রান্না তো না করে পারি না। লাকড়ি ও খড়কুটো জোগাড় করে রান্নার কাজ করছি। কবে গ্যাস আসবে জানি না। গ্যাস না থাকায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় আমাদের। বাচ্চার জন্য দুধ গরম করতে পারছি না। রান্নার অভাবে খাওয়া-দাওয়া বন্ধ হয়ে আছে।
তিতাস অফিস সূত্র জানায়, তদন্তের আলামত রক্ষার স্বার্থে মসজিদ এলাকার দুটি গ্যাস বাল্ব বন্ধ রাখা হয়েছে। আমরা আজ লাইন খোলার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু তদন্ত সংশ্লিষ্টরা খুলতে দেয়নি।
তিনদিন ধরে গ্যাস বন্ধ থাকার বিষয়ে মাইকিং কিংবা কোনো ঘোষণা দিয়েছেন কি-না জানতে চাইলে তিতাস অফিসের কর্মকর্তারা জানান, যেহেতু সবাই মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনা জানেন তাই মাইকিং করার দরকার মনে করেননি তারা। এমনকি কবে নাগাদ গ্যাস চালু হতে পারে সে বিষয়েও নিশ্চয়তা দিতে পারেননি তিতাস কর্মকর্তারা।
শুক্রবার রাত পৌনে ৯টার দিকে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার পশ্চিম তল্লা বায়তুস সালাত জামে মসজিদে গ্যাস লিকেজ থেকে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে দগ্ধ অবস্থায় ৩৭ জনকে উদ্ধার করে শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। একই সঙ্গে মসজিদের অভ্যন্তরে ক্ষয়ক্ষতি হয়। এরপর থেকে ওই এলাকার গ্যাসলাইন বন্ধ রেখেছে তিতাস।
অভিযোগ আছে, মসজিদ কমিটি ৮-৯ মাস আগে তিতাসকে গ্যাস লিকেজের কথা জানিয়েছিল। কিন্তু দাবি করা ৫০ হাজার টাকা না দেয়ায় লাইনটি মেরামত করেনি তিতাস। এ ঘটনায় দেশজুড়ে তুমুল আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে। দগ্ধ হয়ে ইতোমধ্যে মারা গেছেন ২৪ জন। বাকি ১৩ জনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
শাহাদাত হোসেন/এএম/এমএস