সাড়ে তিন বছর ধরে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণ আ.লীগ নেতার, আদালতে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক বরিশাল
প্রকাশিত: ০৭:৫৯ পিএম, ২৫ আগস্ট ২০২০
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. এমদাদুল হক মনির

ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. এমদাদুল হক মনিরের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে বরিশাল আদালতে এক কলেজছাত্রী (২১) মামলা করেছেন।

মামলায় এমদাদুল হক মনির ছাড়াও তার বন্ধু মো. মিঠু সিকদার নামের এক ব্যবসায়ীকেও আসামি করা হয়েছে। মিঠু সিকদারের বিরুদ্ধে ধর্ষণে সহায়তার অভিযোগ আনা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) দুপুরে ওই কলেজছাত্রী বাদী হয়ে বরিশাল নারী শিশু নির্যাতন অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে মামলাটি করেন। বিচারক আবু শামীম আজাদ বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ওসিকে মামলাটি তদন্ত করে আগামী ৪ অক্টোবরের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।

মামলার আসামিরা হলেন- কাঁঠালিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. এমদাদুল হক মনির ও তার বন্ধু বরিশাল নগরীর আগরপুর রোডের বাসিন্দা মো. মিঠু সিকদার। মামলার বাদী ওই কলেজছাত্রীর বাড়ি কাঁঠালিয়া উপজেলার আমুয়া গ্রামে। তিনি গত বছর আমুয়া কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেছেন।

বাদীপক্ষের আইনজীবী আবুল কালাম আজাদ বলেন, ওই কলেজছাত্রী ও এমদাদুল হক মনিরের বাড়ি একই উপজেলায়। এমদাদুল হক মনির এর আগের মেয়াদে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। প্রায় চার বছর আগে আমুয়া এলাকায় একটি অনুষ্ঠানে এমদাদুল হক মনিরের সঙ্গে ওই কলেজছাত্রীর পরিচয় হয়। এরপর চাকরি দেয়া ও বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে কলেজছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক করেন এমদাদুল হক মনির। তারা ২০১৭ সালের ৩ এপ্রিল থেকে এ বছরের ১ আগস্ট পর্যন্ত সাড়ে তিন বছর বরিশাল নগরী এবং কাঁঠালিয়ার বিভিন্ন বাসায় নিয়ে ওই কলেজছাত্রীকে ধর্ষণ করেন মনির। এই কাজে মনিরকে সহায়তা করেন তার বন্ধু মিঠু সিকদার। মনির তার বন্ধু মিঠু সিকদারের বরিশাল নগরীর আগরপুর রোডের ভাড়া বাসায় নিয়েও কলেজছাত্রীকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন।

বাদীপক্ষের আইনজীবী আবুল কালাম আজাদ আরও বলেন, বিয়ের জন্য চাপ দেয়া হলে মনির কিছু কাগজপত্রে কলেজছাত্রীর স্বাক্ষর নিয়ে বলেন তাদের বিয়ে হয়ে গেছে। তবে ওই কাগজপত্র কলেজছাত্রীকে দেয়া হয়নি। সম্প্রতি বিয়ের কাগজপত্র দাবি করলে চেয়ারম্যান মনির টালবাহানা শুরু করেন। এ নিয়ে গত ১৯ আগস্ট বরিশাল নগরীর এক আইনজীবীর চেম্বারে সালিশ বৈঠও হয়। এতে সুরাহা না হওয়ায় উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার দুপুরে ধর্ষণ মামলা করেন ওই কলেজছাত্রী।

ধর্ষণের অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এমদাদুল হক মনির বলেন, কিছুক্ষণ আগে এক ব্যক্তির মাধ্যমে মামলার বিষয়টি জানতে পেরেছি।

মামলার বাদী আপনার পূর্ব-পরিচিত কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, জনপ্রতিনিধি হিসেবে বিভিন্ন সময় আমুয়া এলাকায় যেতে হয়েছে। তখন অনেক নারী-পুরুষের সঙ্গে পরিচয় হয়েছে। তবে এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। তারপরও যখন মামলা হয়েছে বিষয়টি আইনিভাবে মোকাবিলা করব আমি।

সাইফ আমীন/এএম/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।