পাবনায় ওসি ক্লোজড, এলাকায় মিষ্টি বিতরণ

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি পাবনা
প্রকাশিত: ০৯:৫০ এএম, ১০ আগস্ট ২০২০

পাবনার বেড়া উপজেলার আমিনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম মাইনুদ্দিনকে প্রত্যাহার (ক্লোজ) করা হয়েছে। রোববার (৯ সেপ্টেম্বর) পাবনার পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলাম ওসি মাইনুদ্দিনকে প্রত্যাহার করে পাবনা পুলিশ লাইন্সে সংযুক্তির আদেশ দেন।

ওসির প্রত্যাহারের সুনির্দিষ্ট কারণ জানাননি জেলা পুলিশের কোনো কর্মকর্তা। তবে তার ক্লোজড হওয়ার সংবাদে কেউ কেউ মিষ্টি বিতরণ করেছেন।

পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শামীমা আখতার রোববার রাতে জানান, ওসি মাইনুদ্দিনকে প্রত্যাহারের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তাকে পাবনা পুলিশ লাইন্সে সংযুক্তির কথা নিশ্চিত করলেও প্রত্যাহারের সুনির্দিষ্ট কারণ জানাতে রাজি হননি তিনি।

এদিকে পাবনার বেড়া উপজেলার আলোচিত চার ইউপি চেয়ারম্যানের কয়েক মাসের মোবাইল ফোনের কল ডিটেইলস রেকর্ড (সিডিআর) সংগ্রহ করায় ওসির ওপর তারা ক্ষিপ্ত ছিলেন। এ নিয়ে ওই চেয়ারম্যানরা নানা প্রতিবাদ করে আসছিলেন।

জানা গেছে, গত ২ জুন বেড়া উপজেলার চার স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান স্বরাষ্ট্র সচিব, আইজিপি, পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি ও পাবনার জেলা প্রশাসকের কাছে ওসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবিতে লিখিত আবেদন জানান।

জাতসাখিনী ইউপি চেয়ারম্যান রেজাউল হক বাবু, মাসুমদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মিরোজ হোসেন, নতুন ভারেঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান এমএ রফিকুল্লাহ এবং রুপপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হাশেম উজ্জল ওসির বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে তারা অভিযোগ করেছিলেন ওসি এসএম মাইনুদ্দিন তাদের তিন মাসের ফোনালাপের রেকর্ড সংগ্রহ করে অর্থের বিনিময়ে তাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগের আরেকটি গ্রুপের কাছে পৌঁছে দেন। যদিও এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন ওসি।

এ অভিযোগ তদন্তের জন্য জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে পাবনার তৎকালীন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাসকে (বর্তমানে ময়মনসিংহ পিবিআই এর পুলিশ সুপার) প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়। তবে পরবর্তীতে সে তদন্ত প্রতিবেদনের বিস্তারিত প্রকাশ করেনি জেলা পুলিশ।

এছাড়া গত ১৩ এপ্রিল পাবনার ঢালারচর ইউপি চেয়ারম্যান কোরবান আলী ২২৯ বস্তা ভিজিডি চাল চুরি করে ধরা পড়েন। ওই চেয়ারম্যানকে র‌্যাব জিজ্ঞাসাবাদ করে চাল চুরির বিষয়ে প্রাথমিক সত্যতা পায়। এরপর র‌্যাব-১২ ডিএডি সোহরাব আলী বাদী হয়ে ওই রাতেই আমিনপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। অভিযুক্ত চেয়ারম্যানকে আদালত জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান।

তবে গত ১৯ মে চাঞ্চল্যকর এই মামলাকে ‘তথ্যগত’ ভুল দাবি করে র‌্যাবের অভিযোগকে অসত্য বলে কোরবান আলী সরদারকে অব্যাহতি দিয়ে একটি বিতর্কিত ‘চূড়ান্ত তদন্ত’ প্রতিবেদন দেয় আমিনপুর থানা পুলিশ। ওসি মাইনুদ্দিন অভিযুক্ত চেয়ারম্যান কোরবান আলীকে খালাস দেয়ার জন্য প্রতিবেদনে সুপারিশও করেন। পুলিশের এমন তদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখান করে অভিযানের সত্যতার বিষয়ে আদালতে বক্তব্য উপস্থাপনের কথা জানান র‌্যাব ১২ এ কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল খায়রুল ইসলাম। র‌্যাব পুলিশের এমন পরস্পরবিরোধী অবস্থানের বিষয়ে সে সময় গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে তোলপাড় সৃষ্টি হলেও ওসি মাইনুদ্দিন বহাল তবিয়তেই এতদিন ছিলেন।

রূপপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হাশেম উজ্জল জানান, দীর্ঘ দুইমাসেও ওসি মাইনুদ্দিনের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি জেলা পুলিশ। তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করেন ওই চেয়ারম্যান।

তবে এসব বিষয়ে কিছুই বলতে রাজি হননি পাবনার পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলাম।

এফএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।