মায়ের জমানো টাকায় লেবানন পাঠানো হয় মিজানুরকে
লেবাননের বৈরুতে বিস্ফোরণে নিহত মিজানুর রহমান খানের (২৫) গ্রামের বাড়ি মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার শিকারমঙ্গল ইউনিয়নের কাজীকান্দি গ্রামে বইছে শোকের মাতম। সন্তানকে হারিয়ে পুরো পরিবারসহ গ্রামের মানুষ এখন নিস্তব্ধ হয়ে পড়েছেন।
বুধবার বিকেলে নিহত মিজানের বাড়ি গিয়ে জানা গেছে, ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে লেবাননের বেরু শহরে পাড়ি জমান মিজানুর রহমান খান। সেখানে একটি হোটেলে কাজ করতেন তিনি। মঙ্গলবার বিস্ফোরণে তার মৃত্যুর খবর এলে পুরো পরিবারসহ গ্রামের মানুষ শোকে নিস্তব্ধ হয়ে পড়েন।
কাজীকান্দি গ্রামের জাহাঙ্গীর খানের ছেলে মিজানুর রহমান। তার মা ঢাকায় একটি কারখানায় চাকরি করে কিছু টাকা জমিয়েছিলেন। এছাড়া আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে ধারদেনা করে এবং দুই লাখ টাকা এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে মোট ছয় লাখ টাকায় মিজানুর লেবাননে যান। পরিবারের সদস্যদের একটু সুখের আশায় লেবাননে পাঠানো হয় মিজানুরকে।
মিজানুররা তিন ভাই ও এক বোন। ভাই-বোনের মধ্যে মিজানুর সবার বড়। তার স্ত্রী ও তিন বছরের এক কন্যাসন্তান রয়েছে। ঢাকায় কারখানায় কাজ করা অবস্থায় মিজানুরের মায়ের দুই হাতের ছয়টি আগুল পুড়ে যায়। তিনি এখন অসুস্থ অবস্থায় গ্রামের বাড়িতেই থাকছেন। বাবা কৃষিকাজ করে কোনোমতে পরিবার-পরিজন নিয়ে বেঁচে আছেন।
বাকরুদ্ধ কণ্ঠে মিজানুরের বাবা জাহাঙ্গীর খান বলেন, মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে আমার সাথে শেষ কথা হয়েছে। আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পারি আমাদের মিজান বোমা বিস্ফোরণে মারা গেছে। আমি আমার সন্তানের লাশ দ্রুত দেশে ফেরত চাই।
শিকারমঙ্গল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম মৃধা বলেন, মিজানুরের মারা যাওয়ার কথা শুনেছি। ওর পরিবারের সদস্যদের আর্থিক সহযোগিতাসহ যত ধরনের সহযোগিতা লাগবে আমি তা করব। লাশ দ্রুত দেশে আনার জন্যও আমি সর্বাত্মক চেষ্টা করব।
এ কে এম নাসিরুল হক/বিএ