উপকারের কথা ভুলে যাননি কৃষক, প্রধানমন্ত্রীর নামে কোরবানি

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি লালমনিরহাট
প্রকাশিত: ০৪:৫১ পিএম, ০২ আগস্ট ২০২০
চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রীর নামে কোরবানি দিলেন তিস্তাপারের হতদরিদ্র কৃষক মোজাম্মেল হক

এবারও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে পশু কোরবানি দিয়েছেন লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তাপারের হতদরিদ্র কৃষক মোজাম্মেল হক আকন্দ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুদানের টাকায় একটি ছাগল কিনে স্বাবলম্বী হয়ে প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘায়ু কামনা করে প্রতি বছর পশু কোরবানি দিচ্ছেন এই কৃষক।

গতকাল রোববার (০২ আগস্ট) দুপুরে তিস্তাপারের শাহী সোনা জামে মসজিদের তালেব মোড় এলাকায় চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রীর নামে একটি খাসি কোরবানি দেন কৃষক মোজাম্মেল। গত চার বছর ধরে প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘায়ু কামনা করে কোরবানি দেন তিনি।

রোববার পশু কোরবানির সময় উপস্থিত ছিলেন- হাতীবান্ধা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা মোতাহার হোসেন কলেজের অধ্যক্ষ আবুবকর সিদ্দিক শ্যামল, গড্ডিমারী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এলিজা খাতুন, মুক্তিযোদ্ধা শহিদ উদ্দিন ও গড্ডিমারী ইউনিয়ন যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

Lalmonirhat-kurbani-2

তিস্তাপারের প্রতিবন্ধী কৃষক মোজাম্মেল হক আকন্দ হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়নের নিজ গড্ডিমারী গ্রামের মৃত কেরামত আলী আকন্দের ছেলে। তিস্তা নদীর ভাঙনে পাঁচবার বসতভিটা হারিয়েছেন তিনি। এরপর তিস্তা নদীর হাত থেকে রক্ষা পাওয়া মাত্র ৩০ শতাংশ জমিতে ঘর বেঁধে বসবাস শুরু করেন কৃষক মোজাম্মেল।

স্থানীয় সংসদ সদস্য মোতাহার হোসেনের মাধ্যমে ২০১৫ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তহবিল থেকে ২০ হাজার টাকা অনুদান পান কৃষক মোজাম্মেল হক। অনুদান পেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য একটি পশু কোরবানি দেবেন বলে নিয়ত করেন তিনি। এরপর প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘায়ু কামনা করে ১১ জন নারী ও তিনি নিজে কোরআন খতম দেন। ২০১৭ সাল থেকে প্রধানমন্ত্রীর নামে পশু কোরবানি দিয়ে আসছেন মোজাম্মেল হক।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালে তিস্তা নদীর ভাঙনে জায়গাজমি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েন মোজাম্মেল হক। কোনো উপায় না পেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সাহায্যের আবেদন করেন। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে ২০ হাজার টাকা অনুদান দেন। অনুদানের ১৭ হাজার টাকায় ঘর-বাড়ি মেরামতের কাজে লাগান মোজাম্মেল হক। বাকি তিন হাজার টাকায় একটি ছাগল কেনেন। ওই ছাগল লালন-পালন করলে ছয়টি ছাগল হয়। সেইগুলো থেকে আরও চারটি ছাগল হয়। এভাবে বাড়তে থাকে তার ছাগলের সংখ্যা। পাশাপাশি ছাগল বিক্রি করে সংসার চালাতে থাকেন তিনি। এবার দুটি ছাগল বিক্রি ও একটি প্রধানমন্ত্রীর নামে কোরবানি দিয়েছেন তিনি। একটি ছাগলেই ভাগ্য ফিরেছে মোজাম্মেল হকের। ছাগল বিক্রি করে ইতোমধ্যে একটি গরু কিনেছেন তিনি। বর্তমানে তার তিনটি গরু ও পাঁচটি ছাগল রয়েছে।

Lalmonirhat-kurbani-2

প্রতিবন্ধী মোজাম্মেল হক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া অনুদানের টাকায় আমি একটি ছাগল কিনি। সেই ছাগল দিয়ে আমার ভাগ্য ফিরেছে। প্রধানমন্ত্রীর উপকারের কথা ভুলে যাইনি। তাই আমি ওই সময় নিয়ত করেছিলাম প্রতি বছর প্রধানমন্ত্রীর নামে একটি করে ছাগল কোরবানি দেব। এবার চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রীর নামে কোরবানি দিলাম।

হাতীবান্ধা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা মোতাহার হোসেন কলেজের অধ্যক্ষ আবুবকর সিদ্দিক শ্যামল বলেন, প্রতিবন্ধী মোজাম্মেল হক তিস্তাপারের অসহায় কৃষক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুদানের টাকায় একটি ছাগল কিনে স্বাবলম্বী হয়েছেন তিনি। এরপর থেকে প্রতি বছর প্রধানমন্ত্রীর নামে কোরবানি দিচ্ছেন মোজাম্মেল হক।

রবিউল হাসান/এএম/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।