সুন্দরবনে কার্গো ডুবির ঘটনায় বন বিভাগের মামলা


প্রকাশিত: ১২:৫৩ পিএম, ২৮ অক্টোবর ২০১৫

সুন্দরবনের পশুর নদীতে কার্গো ডুবির ঘটনায় ৫ কোটি টাকার ক্ষতি উল্লেখ করে মংলা থানায় মামলা হয়েছে।

সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের ডিএফও মো. সাইদুল ইসলামের নির্দেশে চাঁদপাই ফরেস্ট রেঞ্জ কর্মকর্তা গাজী মতিয়ার রহমান বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।

এর আগে মঙ্গলবার রাতে মংলার জয়মনির ঘোল এলাকায় নির্মাণাধীন সাইলোর কাছে ৫১০ টন কয়লা নিয়ে কার্গোর তলাফেটে মাদার ভ্যাসেল জিয়া-হাস ডুবে যায়। এ ঘটনায় কার্গো জাহাজের মাস্টার ভুলু গাজীকে আটক করা হয়েছে।

অপরদিকে ঘটনা তদন্তে সুন্দরবনের সহকারী বন সংরক্ষক বেলায়েত হোসেনকে প্রধান করে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রির্পোট দিতে বলেছেন সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের ডিএফএ মো. সাইদুল ইসলাম।

বন বিভাগের গঠিত তদন্ত কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন, গাজী মতিয়ার রহমান ও আব্দুল মান্নান।

এদিকে কার্গো ডুবির পর সকাল থেকে পশুর চ্যানেল সচল রয়েছে বলে জানান মংলা পোর্ট কর্তৃপক্ষের মেম্বার অপারেশন মো. আলতাফ হোসাইন।

তিনি বলেন, কার্গোর মালিক ঢাকার সেফ ব্রাদার্সকে কার্গোটি উদ্ধারের ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বর্তমানে মংলা কোস্টগার্ড বিষয়টি তদারকি করছে।

তিনি আরও জানান, শুধুমাত্র ভাটার সময়ে নদীতে ডুবে যাওয়া কার্গোটির মাস্তুল দেখা যাচ্ছে।
 
জোয়ারের সময় যাতে সেটি দেখা যায় সেজন্য ডুবে যাওয়া কার্গোর মাস্তুলের সঙ্গে একটি ড্রাম বেধে চিহ্নিত করে রাখা হয়েছে।

এদিকে বুধবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন মংলা বন্দরের চেয়ারম্যান  রিয়াল এ্যডমিরাল রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ। এসময় তার সঙ্গে মংলা বন্দরের  অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ডুবে যাওয়া কার্গো এমভি জিয়া-হাসের মালিক দিল খান জানান, কার্গো জাহাজটিকে অন্য জাহাজের মাধ্যমে উদ্ধারের জন্য ইতোমধ্যে তিনি একটি জাহাজ মংলা বন্দরে পাঠিয়েছে।

উদ্ধারকারী জাহাজটি বর্তমানে মেঘনা নদীতে অবস্থান করছে। সেটি মংলায় যত দ্রুত সম্বব পৌঁছানোর পর হয়তো বৃহস্পতিবার উদ্ধারকাজ শুরু করা যাবে।

তিনি বলেন, যেহেতু একটি দুর্ঘটনা ঘটে গেছে তাই আমাদের চেষ্টা রয়েছে যত কম সময়ের মধ্যে নদীতে ডুবে থাকা কয়লা বোঝাই কার্গোটি উদ্ধারের।

সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের ফরেস্ট অফিসার ও মামলার বাদী গাজী মতিয়ার রহমান বলেন, ডুবে যাওয়া কার্গোটিতে ভারী কয়লা ছিলো। ভারী কয়লা পানির সঙ্গে মিশে সুন্দরবনের জীব বৈচিত্রের তুলনামূলক কম ক্ষতি করবে।

তিনি জানান, আমাদের ভয় ডুবে যাওয়া কার্গোতে যে জ্বালানি রয়েছে সেটি যদি পানির সঙ্গে মিশে যায় তাহলে সেটা কয়লার থেকেও বড় ধরনের ক্ষতি হবে বনের জন্য।

মংলা থানার জয়মনির ঘোল নৌ-টহল ফাঁড়ির ইনচার্জ (এসআই) নজরুল ইসলাম জানান, জিয়া-হাস নামের কার্গো জাহাজটি ৫১০ টন কয়লা নিয়ে মংলা বন্দরের হারবাড়িয়া থেকে খুলনায় যাবার পথে মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে কার্গোটির তলা ফেটে ডুবে যায়।  মংলায় নির্মাণাধীন সাইলো এলাকার কাছে কার্গো ডুবির ঘটনার সময় ওই কার্গোতে থাকা নাবিকসহ ১০ জন স্টাফ অন্যদের সহযোগিতায় নিরাপদে সাঁতরে তীরে উঠতে সক্ষম হয়।

এর আগে, গত বছরের ৯ ডিসেম্বর সুন্দরবনের শ্যালা নদীতে তেলবাহী ট্যাঙ্কার ওটি নর্দান -৭ ডুবির ঘটনা ঘটে। এর পর চলতি বছরের ৪ মে সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের ভোলা নদীতে সারবাহী কার্গো জাহাজ জাবালে নূর ডুবির ঘটনা ঘটে।

এমএএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।