প্রতিদিন ৫শ টাকার খাবার খায় বাংলার রাজা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি কুড়িগ্রাম
প্রকাশিত: ০৯:৩৯ এএম, ১৮ জুলাই ২০২০

ধবধবে সাদার ওপর কালো লোমে শরীর ঢাকা। বিশাল দেহে ঢেউ খেলানো চলন। ঘরের বাইরে আনলে একটু হিংস্র হয়ে লম্বা শিং দিয়ে মাটি খুঁড়ে শান্ত হয়। খাবারেও রয়েছে রাজকীয় ভাব। সব মিলিয়ে রাজকীয় স্বভাবের কারণে নাম রাখা হয়েছে ‘বাংলার রাজা’।

কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলার সদর ইউনিয়নের ভারতীয় সীমান্ত ঘেঁষা মানিক কাজী গ্রামের বাসিন্দা উমর আলীর ছোট ছেলে জয়নাল আবেদিনের বাড়িতে পালন করা অস্ট্রোলিয়ান শংকর জাতের একটি ষাঁড়ের নাম বাংলার রাজা। দৈত্যাকার ষাঁড়টির দৈর্ঘ্য ১২ ফুট, উচ্চতা ছয় ফুটের কাছাকছি। সাড়ে চার বছর বয়সী ষাঁড়টির ওজন প্রায় ২৪ থেকে ২৫ মণ। দাম চাওয়া হচ্ছে ১৫ লাখ টাকা। এবারে ঈদুল আজহার কোরবানির পশুর হাটে বাংলার রাজাই কুড়িগ্রাম জেলার প্রথম এবং একমাত্র বড় ষাঁড়।

বাংলার রাজার মালিক জয়নাল আবেদিন জানান, কয়েক বছর আগে দুধের যোগান দিতে তিনি একটি গাভী কিনেন। সেই গাভীর পেট থেকে এই রাজার জন্ম। শখের বশে লালন-পালন করতে থাকেন। সম্পূর্ণ দেশী খাবারে দিয়ে লালন-পালন করেন রাজাকে। আজ পর্যন্ত ষাঁড়টিকে মোটাতাজাকরণ ওষুধ কিংবা কোনো প্রকার রাসায়ানিক খাদ্য দেননি জয়নাল। শুধুমাত্র কৃমিনাশক ট্যাবলেট খাইয়েছেন বলে দাবি তার।

তিনি আরও জানান, রাজাকে প্রতিদিন ধানের গুড়ো, গমের ভুসি, খড় আর ঘাস খাওয়ান। রাজার ঘাসের যোগান দিতে একবিঘা জমি ঘাঁস চাষ করছেন। সব মিলিয়ে প্রতিদিন ৪শ-৫শ টাকার খাবার খায় বাংলার রাজা।

B-Raza--02.jpg

জয়নাল আবেদিন বলেন, পরিবারের একজন সদস্য মনে করে নিজের সন্তানের মতো লালন-পালন করে বড় করেছি রাজাকে। এখন তাকে বিক্রি করতে হচ্ছে। এমনটা ভাবতেই খারাপ লাগে। বিক্রির ঘোষণা দেয়ার পর প্রতিদিন দুই একজন করে ক্রেতা আসছেন বাড়িতে। তবে মন মতো দাম বলছেন না। করোনা আর বন্যা না থাকলে ভালো দামে বিক্রি করতে পারতাম। তবে লাভ না হলেও আসল দামে বিক্রি করতে পারবেন বলে তিনি প্রত্যাশা করেন।

স্থানীয় বাসিন্দা সোহরাব, আলী, আজমসহ অনেকেই বলেন, আমাদের জানা মতে জেলায় একমাত্র বড় ষাঁড় বাংলার রাজা। জয়নাল অনেক কষ্ট করে ষাঁড়টি লালন-পালন করেছেন। এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত না হওয়ায় ক্রেতাদের যাতায়াতে সমস্যা হচ্ছে। বাংলার রাজা ন্যায্য মূল্যে বিক্রি হবে বলে তারা আশাবাদী।

ভুরুঙ্গামারী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ডা. কে এম ইফতেখারুল ইসলাম বলেন, জয়নাল আবেদিন সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে ষাঁড়টিকে লালন-পালন করেছেন। আমরা নিয়মিত খোঁজখবর এবং পরামর্শ দিচ্ছি। আশা করছি ন্যায্য মূল্যে তিনি ষাঁড়টি বিক্রি করতে পারবেন।

নাজমুল হোসাইন/আরএআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।