বিয়ের প্রলোভনে প্রেমিকাকে ধর্ষণ, প্রেমিককে দেড় লাখ টাকা জরিমানা
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায় বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি মীমাংসায় সালিশ বৈঠকে অভিযুক্ত যুবককে দেড় লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। কিন্তু সালিশের রায় না মেনে ওই তরুণী থানায় মামলা করেছেন। বৃহস্পতিবার (১৬ জুলাই) মামলাটি নথিভুক্ত করেছে কসবা থানা পুলিশ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কসবা উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের ফতেহপুর গ্রামের বাসিন্দা আজিজ মিয়ার ছেলে সাইফুলের সঙ্গে স্কুলে পড়াকালে একই গ্রামের বাসিন্দা ওই তরুণীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বর্তমানে সাইফুল ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত। আর ওই তরুণী ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজে পড়ছেন।
অভিযোগ উঠেছে, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ওই তরুণীর সঙ্গে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেছেন সাইফুল। সম্প্রতি ওই তরুণী সাইফুলকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন। এ ঘটনায় গত ২ জুলাই সাইফুলের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন ওই তরুণী।
বিষয়টি মীমাংসায় বুধবার (১৫ জুলাই) গোপীনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মান্নান জাহাঙ্গীরসহ স্থানীয় মাতব্বররা সালিশ বৈঠক করেন। সালিশে সাইফুলকে দেড় লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। কিন্তু ওই তরুণীর পরিবার জরিমানার রায় মেনে নেয়নি। এরপর বৃহস্পতিবার (১৬ জুলাই) ওই তরুণীর দেয়া লিখিত অভিযোগটি নিয়মিত মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করে পুলিশ।
ওই তরুণী বলেন, আমার পরিবারকে চাপ দিয়ে সালিশ বৈঠক বসানো হয়। সালিশে আমি কথা বলতে চাইলে আমাকে গালমন্দ করা হয়। সাইফুল আমার সঙ্গে যা করেছে, এর সমাধান বিয়ে নয়তো তার শাস্তি।
গোপীনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মান্নান জাহাঙ্গীর জানান, প্রায় শতাধিক গণ্যমান্য ব্যক্তি সালিশ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। এর মধ্যে জুড়ি বোর্ডেই উপস্থিত ছিলেন ২৬ জন। ওই তরুণী যে ধর্ষিত হয়েছে তার কোনো প্রমাণ আমরা পাইনি। জুড়ি বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সাইফুলকে দেড় লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছিল। কিন্তু ওই তরুণী সালিশের রায় মানেননি।
এ ব্যাপারে কসবা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. লোকমান হোসেন বলেন, ওই তরুণীর অভিযোগটি নিয়মিত মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়েছে। অভিযুক্ত সাইফুলকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। সকালে ওই তরুণীকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।
আজিজুল সঞ্চয়/আরএআর/জেআইএম