মিউজিক ভিডিওতে অভিনয়ের জন্য ডেকে এনে তরুণীকে গণধর্ষণ
মিউজিক ভিডিওতে অভিনয়ের কথা বলে গাজীপুর থেকে পঞ্চগড়ের বোদায় ডেকে এনে এক তরুণীকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় যুব মহিলা লীগের এক নেত্রীসহ তিনজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ১০-১২ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।
বুধবার (১৫ জুলাই) গভীর রাতে মামলার প্রধান আসামি উপজেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক আবিদা সুলতানা লাকী ও প্রথম বাংলা আইপি টিভির চিফ নিউজ এডিটর সাজ্জাদ হোসেন মিলকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গাজীপুরের কালিয়াকৈর এলাকায় থাকতেন ওই তরুণী। ইউটিউবের জন্য বিভিন্ন মিউজিক ভিডিওতে কাজ করার সময় পাঁচ বছর আগে পরিচয় হয় পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার সাজ্জাদ হোসেন মিলনের সঙ্গে। ঢাকায় মিলন ভিডিও সম্পাদনার কাজ করতেন। নিজেকে প্রথম বাংলা টিভি নামে একটি প্রতিষ্ঠানের চিফ নিউজ এটিডর ও গ্রাফিক্স ডিজাইনার বলে পরিচয় দিতেন সাজ্জাদ। এই সম্পর্কের সূত্র ধরেই সাজ্জাদ নিজ এলাকায় একটি মিউজিক ভিডিও তৈরির জন্য মডেল হিসেবে কাজ করাতে ওই তরুণীকে গত ১৪ জুলাই সকালে বোদায় নিয়ে আসেন। সাজ্জাদ তাকে নিয়ে বোদা উপজেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক আবিদা সুলতানা লাকীর বাড়িতে রাখেন। ওই বাড়িতেই সাজ্জাদসহ ৪-৫ জন মিলে তাকে ধর্ষণ করেন।
পরদিন ওই তরুণীকে বোদা পৌরসভার ভাসাইনগরে এক বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেও তাকে গণধর্ষণ করা হয়। বুধবার রাতে একপর্যায়ে সেখান থেকে পালিয়ে বোদা থানায় আশ্রয় নেন ওই তরুণী। রাতেই তিনি তিনজনের নামসহ ১০-১২ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করে বোদা থানায় মামলা করেন।
মামলার নামীয় আসামিরা হলেন- বোদা পৌরসভার ঝিনুকনগর এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে ও প্রথম বাংলা আইপি টিভির চিফ নিউজ এডিটর সাজ্জাদ হোসেন মিলন (৩৩), বোদা উপজেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক আবিদা সুলতানা লাকী (৪৬) ও বোদা নগরকুমারী এলাকার জসীম উদ্দিন (২২)। রাতেই সাজ্জাদ হোসেন মিলন ও আবিদা সুলতানা লাকীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও বোদা থানা পুলিশের পরিদর্শক আবু সায়েম মিয়া বলেন, প্রধান দুই আসামিকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আদালতে তাদের পাঁচদিন করে রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। এছাড়াও ধর্ষণের শিকার ওই তরুণীর ডাক্তারি পরীক্ষা ও জবানবন্দি গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী বলেন, এই ঘটনায় অনেক বিষয় বেড়িয়ে আসছে। আমরা ধারণা করছি এই ঘটনার সঙ্গে পুরো একটি চক্র জড়িত। আদালত আসামিদের রিমান্ড মঞ্জুর করলে আরও অনেক তথ্য আমরা বের করতে পারবো। আমরা পুরো চক্রটিকেই বের করার জন্য কাজ করে যাচ্ছি।
সফিকুল আলম/আরএআর/জেআইএম