নাশকতার আশঙ্কায় চট্টগ্রামে নিরাপত্তা জোরদার
নাশকতার আশঙ্কায় চট্টগ্রামে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)। এর আগে ১১০টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হলেও রোববার থেকে পুরো মহানগরীকে এর আওতায় আনা হয়েছে।
রাজধানীতে বিদেশি নাগরিক হত্যা, শিয়া সম্প্রদায়ের তাজিয়া মিছিলে বোমা হামলার পর বন্দর নগরী চট্টগ্রামের নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি অপরাধীদের শনাক্তে নগরীতে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে সিএমপি। এছাড়া নগরীর গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পয়েন্টে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) দেবদাস ভট্টাচার্য বলেন, সিএমপি’র মাসিক অপরাধ বিষয়ক সভায় পুরো নগরীকে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার আওতায় আনার এ সিদ্ধান্ত নেন সিএমপি কমিশনার আব্দুল জলিল মন্ডল।
নগরীর প্রবেশ পথ ও বহির্গমন পথ এবং সকল গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা স্থাপন করা হচ্ছে। জননিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং নাশকতা রোধে এ ব্যবস্থা নিচ্ছে সিএমপি পুলিশ। গত বছর সিএমপির নিজস্ব খরচে প্রথমবারের মত নগরীর ৫০টি স্পটে ১১০টি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছিল।
এবার গুরুত্বপূর্ণ সকল শপিংমল, মার্কেট, বাণিজ্যিক ভবন, আবাসিক এলাকায় ব্যক্তিগত খরচেই লাগাতে হবে এসব ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা। এক্ষেত্রে সিএমপি শুধু এসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করে ক্যামেরা স্থাপনের বিষয়টি তদারক করবে। এসব সিসি ক্যামেরা স্থপানের ব্যয় বহন করতে হবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে।
ক্যামেরা স্থাপন কার্যক্রমের সমন্বয়কারী নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (উত্তর-দক্ষিণ) বাবুল আক্তার জানান, চট্টগ্রামে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ প্রতিরোধ এবং অপরাধী শনাক্ত করার পাশাপাশি ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণকে গুরুত্ব দিয়ে পুরো চট্টগ্রাম মহানগরীকে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার আওতায় আনার কাজ শুরু করেছে সিএমপি।
ইতোমধ্যে নগরীর যেসব এলাকায় ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে তার মধ্যে চট্টগ্রামে মূল প্রবেশপথ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সিটি গেট, এ কে খান মোড়, অলংকার মোড়, জিইসি মোড়, মুরাদপুর, ২ নম্বর গেট, বহদ্দারহাট, অক্সিজেন মোড়, সাগরিকা, সিইপিজেড মোড়, রাহাত্তারপুল, শাহ আমানত সেতু, নিউমার্কেট, কাজীর দেউড়ি মোড় অন্যতম। এসব পয়েন্টে চার থেকে পাঁচটি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে।
এছাড়া নগরীর গুরুত্বপূর্ণ এবং ব্যস্ততম জংশন বহদ্দারহাট, জিইসি মোড়, দু’নম্বর গেট, নিউমার্কেট, কোতোয়ালি, লালদীঘি, সিআরবি, ওয়াসা মোড়, মুরাদপুর, আগ্রাবাদ, বড়পোল, টাইগারপাস মোড়সহ স্পর্শকাতর মোট ৫০টি পয়েন্টে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়।
স্থাপিত ক্যামেরাসমূহ পর্যবেক্ষণে নগরীর লালদীঘির পাড়ে সিএমপির সদর দফতরে একটি বিশেষ নিয়ন্ত্রণকক্ষ স্থাপন করা হয়েছে। এই নিয়ন্ত্রণকক্ষে ১২টি মনিটরে নগরীতে স্থাপিত ক্যামেরার চিত্র পর্যবেক্ষণে যাবতীয় যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হয়েছে।
সিএমপি সূত্র জানায়, প্রত্যেকটি ক্যামেরায় ১শ মিটারের মধ্যে যানবাহনসহ লোকজনের চিত্র শতভাগ ধারণ করা যাবে। কিছুটা অস্পষ্ট অবস্থায় ৪শ’ মিটারের মধ্যে গাড়ির নম্বরসহ সার্বিক চিত্র ক্যামেরায় ধারণ করা যাবে।
নগরীতে গাড়ি চুরি, ছিনতাই, অপহরণসহ বিভিন্ন দুধর্ষ অপরাধের অধিকাংশই সংঘটিত করে বাইরের দুর্বৃত্তরা। তারা নগরীতে এসে অপরাধ সংঘটিত করে দ্রুত পালিয়ে যায়। এতে অপরাধীদের শনাক্ত করতে পুলিশকে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়।
এখন পুরো নগরীকে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার আওতায় আনা হলে এসব অপরাধীদের শনাক্তে অনেক কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে আশা করছেন সিএমপির কর্মকর্তারা।
এসকেডি/এমএস