সাংবাদিক দেখে পালালেন সবাই, নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল
সাতক্ষীরার তিনটি মাদরাসায় নাইটগার্ড ও আয়া নিয়োগে মোটা অংকের টাকা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (৩ জুলাই) তাদের নিয়োগ দিতে সদর উপজেলার বাঁকাল এলাকায় দারুল হাদিস আহমাদিয়া মাদরাসায় গোপনে পরীক্ষার আয়োজন করা হয়। তবে বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় শেষ পর্যন্ত নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে।
সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা এলাকার বাসিন্দারা জানান, তালা উপজেলার পাটকেলঘাটা থানার কাশিয়াডাঙ্গা দাখিল মাদরাসা, সরুলিয়া কিয়ামিয়া দাখিল মাদরাসা ও বড়বিলা সোনিয়া দাখিল মাদরাসায় নাইটগার্ড ও আয়া পদে নিয়োগের জন্য নাইটগার্ড পদে ১০ লাখ ও আয়া পদে পাঁচ লাখ টাকা করে উত্তোলন করা হয়েছে। টাকা উত্তোলনের মাধ্যমে সাতক্ষীরা সদরের বাঁকাল এলাকায় একটি মাদরাসায় শুক্রবার গোপনে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার ব্যবস্থা করা হয়। এর সঙ্গে কয়েকজন জনপ্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তাসহ মাদরাসা সংশ্লিষ্টরা জড়িত রয়েছেন।
শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে বাঁকাল এলাকার ওই মাদরাসায় গিয়ে দেখা যায়, নাইটগার্ড ও আয়া পদে যারা ইতোমধ্যে টাকার মাধ্যমে চূড়ান্ত হয়েছেন তারাসহ সাপোর্টিং পরীক্ষা দেয়ার জন্য আরও দুইজন করে পরীক্ষার্থী রয়েছেন। তবে তাদের কাছে জানতে চাইলে তারা বিষয়টি অস্বীকার করেন।
তবে একজন স্বীকার করেন, তারা সেখানে চাকরির পরীক্ষা ও নিয়োগের জন্য হাজির হয়েছেন। তবে কেউই নিজের নাম-পরিচয় দিতে রাজি হননি।
শহরের বাঁকাল এলাকায় দারুল হাদিস আহমাদিয়া মাদরাসায় যাওয়ার পর আলতাফ হোসেন নামে একজন মাদরাসাটির পরিচালক বলে দাবি করেন। তবে তিনি ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হননি। এছাড়াও উপস্থিত থাকা নিয়োগ প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা কিছু না জানিয়েই একে একে পালিয়ে যেতে থাকেন। একপর্যায়ে মাদরাসাটির পরিচালক দাবি করা আলতাফ হোসেনও অফিস রুমে ঢুকে ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে দেন। পরে জানা গেছে তিনি সাতক্ষীরা সদরের গোদাকাটা দাখিল মাদরাসার সুপার।
বিষয়টি সাতক্ষীরা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ্ আল মামুনকে জানানো হলে তিনি বলেন, মাদরাসার নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিষয়টি আমাদের অবহিত করা হয় না। বাঁকাল এলাকার ওই মাদরাসায় তারা গোপনে নিয়োগের কার্যক্রম করে থাকেন। এখানে আমাদের কিছু করার নেই।
এদিকে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ওই মাদরাসায় নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য হাজির হন মাদরাসা শিক্ষা অধিদফতরের সহকারী পরিচালক আব্দুল মুকিব। গোপনে নিয়োগ প্রক্রিয়ার আয়োজন ও তথ্য গোপনের বিষয়টি অবহিত করা হলে তিনি নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে দেন।
আব্দুল মুকিব বলেন, গোপনে নিয়োগ পরীক্ষা হবে না। যখন সবাইকে জানিয়ে সংশ্লিষ্টরা পরীক্ষা নিতে পারবেন তখন আমি পরীক্ষা নিতে পারবো। আপাতত এই নিয়োগ বাতিল করা হলো।
আকরামুল ইসলাম/আরএআর/জেআইএম