পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ না দেয়ায় স্কুলছাত্রকে হত্যা
শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার পূর্ব নাওডোবা এলাকায় অপহরণের পর পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ না দেয়ায় শাকিল মাদবর (১৫) নামের এক স্কুলছাত্রকে হত্যা করা হয়েছে। শনিবার (২৭ জুন) ভোরে পুলিশ ওই ছাত্রের লাশ উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।
শাকিল মাদবর উপজেলার হাজী কালাই মোড়লের কান্দি গ্রামের সালাম মাদবরের ছেলে। সে স্থানীয় অ্যাম্বিশন কিন্ডার গার্টেন অ্যান্ড হাই স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র ছিল।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত ২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত সাকিব মাদবর বাবু (২০) উপজেলার হাজি মমিন আলী ফরাজী কান্দি গ্রামের মজিবর মাদবরের ছেলে ও ইমরান মোড়ল (২০) পশ্চিম নাওডোবা মজিদ ঢালীর কান্দি গ্রামের খালেক মোড়লের ছেলে।
শনিবার দুপুর দেড়টার দিকে শরীয়তপুর পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার এসএম আশরাফুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন শিকদার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) তানভীর হায়দার শাওন, জাজিরা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আজহারুল ইসলাম সরকার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পুলিশ সুপার জানান, ২৫ জুন (বৃহস্পতিবার) বিকেলে জাজিরা উপজেলার হাজী কালাই মোড়লের কান্দি গ্রামের শাকিল মাদবরকে খেলার কথা বলে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায় অভিযুক্ত সাকিব মাদবর বাবু। পরে সাকিব মাদবর বাবু (২০), আক্তার মাদবর (২৬), সজিব মাঝি (২২), ইমরান মোড়ল (২০), মহসিন হাওলাদার (২৫) ও স্বপন সরদার (৪৫) অপহরণ করে উপজেলার মোসলেম ঢালীর কান্দি গ্রামের বারেক মৃধার বাড়ির পাশে আটকে রাখে।
একপর্যায়ে শাকিলের চাচা শাহাজুল ইসলাম মাদবরের কাছে মুঠোফোনে ও ম্যাসেজে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন তারা। অন্যদিকে শাকিলকে তার পরিবারের লোকজন ও প্রতিবেশীরা খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন। মুক্তিপণ না দেয়ায় শাকিলকে হত্যা করে পদ্মা সেতু সংলগ্ন ওই গ্রামের বারেক মৃধার বাড়ির পাশের বালুর মাঠে, বালু মাটি দিয়ে চাপা দিয়ে লাশ গুম করে রাখে।
গ্রেফতারকৃত আসামি ইমরান মোড়লকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করলে তার তথ্যমতে শনিবার (২৭ জুন) ভোরে শাকিলের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে মর্গে পাঠায়।
এ ঘটনায় জাজিরা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেছের ওই ছাত্রের বাবা সালাম মাদবর।
গতকাল শুক্রবার (২৬ জুন) অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ বাবু ও ইমরানকে গ্রেফতার করে। তাদের সাতদিনের পুলিশ রিমান্ড চেয়ে শরীয়তপুর আদালতে পাঠানো হয়েছে।আর অপর আসামিদের গ্রেফতারে চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।
ছগির হোসেন/এমএএস/জেআইএম