সরকারি ধানের বীজের সংকটে ফায়দা লুটছে কোম্পানিগুলো

জাগো নিউজ ডেস্ক
জাগো নিউজ ডেস্ক জাগো নিউজ ডেস্ক শায়েস্তাগঞ্জ(হবিগঞ্জ)
প্রকাশিত: ০৫:২৯ পিএম, ২৬ জুন ২০২০
ফাইল ছবি

হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে সরকারি বীজের সংকট দেখা দেয়ায় প্রায় তিনগুণ বেশি দামে বীজ বিক্রির অভিযোগ উঠেছে বেসরকারি কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে। এখন ধান বপনের সময়, কিন্তু শায়েস্তাগঞ্জে কৃষকের চাহিদামতো ধানের বীজ মিলছে না। আমন ধানের বীজের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।

জানা গেছে, আমন ধানের তিনরকম বীজের চাহিদা বেশি। ৪৯, ১১ ও ৩৪ জাতের বীজে ফলন বেশ ভালো হয়। সরকারি বীজ ১০ কেজির বস্তা ৩শ টাকা করে বিক্রি হয়। কিন্তু সরকারি বীজের সংকট থাকায়
কোম্পানিগুলো ৩শ টাকার বস্তা ১ হাজার টাকা করে বিক্রি করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু সেখানেও আবার মান নিয়ে প্রশ্ন আছে। বস্তার গায়ে মূল্য লেখা থাকার কথা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না।

বিজ্ঞাপন

শায়েস্তাগঞ্জে বিভিন্ন কোম্পানি বীজ বিক্রি করে থাকে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কোম্পানি রায়হান সীড, কৃষিবিদ সীড ও নীল সাগর সীড।

এরইমধ্যে কিছুদিন আগে শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভা ও ইউনিয়ন উপ-সহকারী কর্মকর্তা বিভিন্ন কোম্পানির ২শ বস্তা ধানের বীজ আটক করেন। পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে তার সমাধান করা হয়।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

এদিকে বীজতলা তৈরির সময় পেরিয়ে গেলেও সরকারিভাবে বীজ সরবরাহের কোনো উদ্যোগ নেই। ফলে আসন্ন আমন মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হওয়ার উপক্রম হয়েছে।

প্রতিবছর বীজ উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) এ বীজ সরবরাহ করলেও এবার বীজতলা তৈরির মৌসুম চলে গেলেও বীজের সরবরাহ নেই। স্থানীয় ডিলারদের ঘর এখনও ফাঁকা। বীজ না পেয়ে কৃষকদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে।

উপজেলার নুরপুর ইউনিয়নের সুরাবই গ্রামের কৃষক নুরুল হুদা বলেন, বীজের জন্য গত ১৫ দিন যাবত ঘুরছি। কোনো ডিলারদের কাছে সরকারি বীজ নেই। এদিকে বীজতলা তৈরির সময় চলে যাচ্ছে। এমন অবস্থায় চরম উৎকণ্ঠায় আছি।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভার উবাহাটা গ্রামের কৃষক মহিবুর রহমান মুরাদ বলেন, বীজের যে সংকট তাতে এবার ধান চাষ করতে পারব কিনা তা নিয়ে সংশয়ের সৃষ্টি হয়েছে। ৪৯ ধানের সরকারি বীজ বাজারে পাওয়াই যাচ্ছে না। এর সুযোগে বিভিন্ন কোম্পানির বীজের দাম তিনগুণ বেড়ে গেছে।

শায়েস্তাগঞ্জের বীজের ডিলার রঞ্জন দাস বলেন, আমরা সরকারি বীজ লাইন ধরিয়ে ৩০০ টাকা করে বস্তা বিক্রি করেছি, অন্যান্য বীজ ১০ কেজি ৪০০-৪৫০ টাকা বিক্রি করি, বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে এমন অভিযোগ সত্য নয়।

নীল সাগর সীডের বিক্রয় কর্মকর্তা মতিউর রহমান বলেন, আমাদের ১০ কেজি বীজ ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকায় ডিলাররা বিক্রি করে থাকেন। এবার লকডাউনের জন্য ক্যারিং খরচ বেশি পড়ছে।

বিজ্ঞাপন

এ ব্যাপারে শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুকান্ত ধর বলেন, কৃষি অফিস বীজ সরবরাহ করে না। বাংলাদেশ বীজ উন্নয়ন কর্পোরেশন বীজ সরবরাহ করে থাকে। আর বীজের মান নিয়ন্ত্রণের দ্বায়িত্বে থাকে বীজ প্রত্যয়ন অফিস। তবে কৃষি অফিস বীজ বাজার মনিটরিং করে।

এ বিষয়ে হবিগঞ্জ জেলা বীজ প্রত্যয়ন কর্মকর্তা জাহিদুল আমিন বলেন, ধানের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষকরা ধান চাষে ঝুঁকছেন। বাজারে সরকারি বীজের সংকট আছে। তবে সব বীজের না। বিশেষ করে ৪৯ ধানের বীজের সংকট রয়েছে। এ ধানের চাহিদা বেশি হওয়ায় বিএডিসি ডিলারদের চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ করতে পারছে না। এই সুযোগে যেন কেউ অতিরিক্ত মুনাফা করতে না পারে সেজন্য নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে।

কামরুজ্জামান আল রিয়াদ/এফএ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।