যুবলীগ নেতা তালেব হত্যার রহস্য উদঘাটন
অবশেষে বগুড়া শহর যুবলীগের সাবগ্রাম বন্দর কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবু তালেব হত্যার রহস্য উন্মোচন হয়েছে। সেই সঙ্গে দুইজনকে গ্রেফতার ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার করেছে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। শুক্রবার (১৯ জুন) সন্ধ্যায় শহরের বারপুর এলাকা থেকে রক্তমাখা পোশাক পরা অবস্থায় পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে।
গ্রেফতাররা হলেন- বগুড়া সদর থানার আকাশতারা মধ্যপাড়া এলকার আফছার প্রামাণিকের ছেলে চাঁন মিয়া (২১) ও একই এলাকার কাইয়ুম প্রামাণিকের ছেলে বাপ্পারাজ ওরফে বাপ্পা।
গত ১৪ জুন (রোববার) দুপুর দেড়টার দিকে শহরের আকাশতারা জুট মিলের সামনে আবু তালেবকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার পরদিন নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে বগুড়া সদর থানায় তিনজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৭-৮ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন।
বগুড়া জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের পরিদর্শক এমরান মাহমুদ তুহিন বলেন, হত্যাকাণ্ডের পর থেকে আসামিরা রক্তমাখা পোশাক পরেই পালিয়ে বেড়াচ্ছিল। এমন অবস্থাতেই দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারের পর হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জানায়, তিন আসামিই অস্ত্রবাজ ও একসঙ্গে চলাফেরা করতো। এর মধ্যে প্রধান আসামি ফিরোজ ওরফে ফোকরার সঙ্গে তালেবের সম্প্রতি নানা বিষয় নিয়ে মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়। তাছাড়া চান ও বাপ্পার সঙ্গেও তালেবের ভালো সম্পর্ক যাচ্ছিল না। তালেবের ‘বড় ভাই সুলভ’ আচরণ তারা তিনজনই মেনে নিতে পারছিল না। ফলে তালেব বিভিন্ন সময়ে তাদের বিভিন্ন ইস্যুতে ডাকলেও তারা সাড়া দিত না।
ঘটনার দিন তিনজন ঘটনাস্থলের পাশে আইয়ুবের দোকানে পান খাচ্ছিল। এ সময় তালেব একটা মোটরসাইকেল নিয়ে সেখানে আসে। মোটরসাইকেল থেকে নেমে তালেব চাঁনকে ডাক দিলে তিনজনই এগিয়ে আসে। এ সময় তালেব চাঁনকে জিজ্ঞেস করে ‘কিরে, কথা শুনিস না কেন, বেশি সেয়ানা হয়ে গেছু?’ কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে চাঁন চাকু বের করে তালেবের বুকে আঘাত করে। তালেব দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টা করে। এ সময় পেছন থেকে তিনজনই তালেবকে এলোপাতাড়ি ছুরি মারতে থাকে। তালেব মাটিতে পড়ে যাবার পরও তারা মারতে থাকে। এ সময় ফিরোজের চাকুর আঘাতে তালেবের শ্বাসনালী প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
নিজেদের এলোপাতাড়ি কোপে চাঁনের ডান হাতের কনে আঙুল এবং ফিরোজের ডান কনুই কেটে যায়। তাছাড়া আসামিদের দেয়া তথ্যমতে আকাশতারা-গাবতলী রোডে একটি বাগানের মধ্যে থেকে হত্যাকাণ্ডের সময় ব্যবহৃত চাকু উদ্ধার করা হয়।
এ ব্যাপারে বগুড়ার পুলিশ সুপার (এসপি) আলী আশরাফ ভূঁঞা বলেন, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত অপর আসামি ফিরোজ ওরফে ফোকরাকে গ্রেফতার করতে অভিযান অব্যহত রয়েছে।
আরএআর/এমএস