৬শ বোতলকে ৪শ বোতল করলো পুলিশ
রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মনিরুল ইসলাম মনির ৬শ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করে তা জমার খাতায় দেখিয়েছেন মাত্র ৪শ বোতল। এছাড়া সন্দেহভাজন দুই জনকে আটকের পর লাখ টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
শুক্রবার দুপুরে তাদের গোয়েন্দা কার্যালয় থেকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
এলাকাবাসী জানায়, বৃহস্পতিবার বিকেলে মহানগরীর বসুয়া এলাকা থেকে ৬শ বোতল ফেনসিডিলসহ একটি প্রাইভেটকার (ঢাকা মেট্রো-গ-২০-৮৩৩৯) আটক করে ডিবি পুলিশের একটি দল। এসময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ওই প্রাইভেটকার চালক মিলন (৩০) পালিয়ে যান। কিন্তু ওই এলাকা থেকে গাড়ির চালক মিলনের শ্বশুর বাবলু মিয়া (৫০) ও শ্বাশুড়ি লুৎফুন্নেসাকে (৪৫) আটক করে গোয়েন্দা কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই অভিযানের নেতৃত্ব দেন এসআই মনির।
এরপর থেকে আটক ওই দুই জনকে ছাড়িয়ে নিতে দুপক্ষের মধ্যে শুরু হয় দেনদরবার। সর্বশেষ শুক্রবার দুপুরে নগর ৮০ হাজার টাকা ও একটি স্বর্ণের চেইন হাতে পেয়ে ওই দুইজনকে ছেড়ে দেন এসআই মনির বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ব্যাপারে গোয়েন্দা পুলিশের এসআই মনিরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সকল অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, তিনি গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তার সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ওই অভিযান চালান। তবে তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যান প্রাইভেটকার চালক মিলন। পরে স্থানীয়দের উপস্থিতিতে তারা প্রাইভেটকার থেকে দুটি বস্তায় রাখা ৪শ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করে। এসময় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মিলনের শ্বশুর ও শ্বাশুড়িকে গোয়েন্দা হেফাজতে নেয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এছাড়া এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতেই প্রাইভেটকার চালক মিলনকে পলাতক আসামি দেখিয়ে মহানগরীর রাজপাড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্ত মিলন পার্শ্ববর্তী পবার আলিমগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা। আর তার শ্বশুর বাড়ি বসুয়াতেই।
এ ব্যাপারে আরএমপি’র (মুখপাত্র) ও নগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার সুশান্ত কুমার জানান, ওই প্রাইভেটকার থেকে ৪শ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এর মালিক ও বহনকারী মিলন পলাতক থাকায় তার শ্বশুর-শ্বাশুড়িকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গোয়েন্দা কার্যালয়ে নেয়া হয়েছিলো। পরে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তবে তিনি এ ধরনের কোনো অভিযোগ পান নি। এ বিষয়ে তিনি তদন্ত করে দেখবেন বলে আশ্বাস দেন।
উল্লেখ্য, মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সখ্যতা, আটক বাণিজ্য ও সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে অর্থ আদায়ের অভিযোগে গত ৮ আগস্ট রাতে রাজশাহী নগর পুলিশের এসআই মনিরকে প্রত্যাহার করে নেয়া হয়। এর পনের দিনের মাথায় ২৪ আগস্ট আবারো আগের কর্মস্থলে ফেরেন তিনি। এরপর থেকে আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা।
শাহরিয়ার অনতু/এমএএস/আরআইপি