ঈশ্বরদী পৌরসভা নির্বাচন : সম্ভাব্য প্রার্থীদের তৎপরতা


প্রকাশিত: ১১:১৬ এএম, ২২ অক্টোবর ২০১৫

ঈশ্বরদী পৌরসভার আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে সম্ভাব্য মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। আগামী বছরের ১২ জানুয়ারি এ পৌরসভার মেয়াদ পাঁচ বছর পূর্ণ হচ্ছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে সম্ভাব্য মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রাথমিক অবস্থায় তারা এলাকায় জনসংযোগ করছেন।

দেখা-সাক্ষাৎ, অনুষ্ঠানাদিতে অংশগ্রহণ, স্থানীয় সংবাদপত্রে শুভেচ্ছা বিজ্ঞাপন ইত্যাদির মাধ্যমে নিজের অবস্থান জানান দিচ্ছেন।

যদিও দলীয় সমর্থনের ব্যাপার এখনো সময়সাপেক্ষ তদুপরি মেয়র প্রার্থী হিসেবে সেপ্টেম্বর মাসে উপজেলা পরিষদের সমন্বয় কমিটির এক সভায় ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহজেবিন শিরিন পিয়া নিজেকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দিলেও কয়েকদিন পর আবার তা প্রত্যাহার করে নেন।

দলীয় সমর্থনে একাধিকবার প্রার্থী ছিলেন বর্তমানে পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক পৌর চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ মিন্টু। তিনি এবারও ইতোমধ্যে বিভিন্ন ওয়ার্ডে উঠান-বৈঠকের মাধ্যমে কর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে কথাবার্তা বলছেন। তার সমর্থকরা দৃঢ়ভাবেই বলছেন এবার পৌর নির্বাচনে প্রার্থী নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্র বরদাস্ত করা হবে না। গত ৩ অক্টোবর পৌর আওয়ামী লীগের এক সভায় মিন্টুকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

গত ১০ অক্টোবর স্থানীয় প্রগতি রেস্তোরায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলের সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে আবুল কালাম আজাদ মিন্টু পৗের এলাকা নিয়ে তার পরিকল্পনা তুলে ধরেছেন। হজ পালন শেষে গত ১৬ অক্টোবর স্থানীয় আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে নেতাকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে এসে ভূমিমন্ত্রী ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামসুর রহমান শরিফ এমপি বলেন, যেহেতু এবার দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হবে সেহেতু প্রার্থীর বিষয়টি জেলা কমিটি হয়ে কেন্দ্র পর্যন্ত যাবে।

পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও বর্তমান মেয়র মকলেছুর রহমান বাবলু পুনরায় প্রার্থী হচ্ছেন এ কথা তার ঘনিষ্ঠজনদের কাছ থেকে জানা গেছে। গতবার পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া পিন্টু দলের সমর্থনে প্রার্থী হলেও বাবলু নির্বাচনে জয়লাভ করেন। তিনি পান ১৬ হাজার ৬৪৭ ভোট (দেয়াল ঘড়ি), মিন্টু (আনারস) পান ১২ হাজার ৪০৭ এবং পিন্টু (দোয়াত-কলম) পেয়েছিলেন ৪ হাজার ৬৫৪ ভোট।

নানাবিধ মামলা-মোকদ্দমায় জড়িয়ে থাকায় এবার জাকারিয়া পিন্টু নির্বাচনে প্রার্থী না হবার সম্ভাবনা রয়েছে। সেক্ষেত্রে তার সমর্থকরা দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভোট প্রয়োগ করবেন বলে একটি সূত্রে জানা গেছে। বাবলু তৃতীয়বারের মতো মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

গতবার ভোটার সংখ্যা ছিল ৪৪ হাজার ৯৪৩ জন। মেয়াদ উত্তীর্ণের এক বছর ৩ মাস পাঁচদিন পর ২০১১ সালের ১২ জানুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ঈশ্বরদী পৌরসভার।

এদিকে পৌর ছাত্রদলের সভাপতি ইমরুল কায়েস সুমন দলের কাছে মনোনয়ন চাইবেন বলে জানিয়েছেন। তিনিও এলাকায় মানুষের মধ্যে জনসংযোগ করছেন। দল মনোনয়ন দিলে শক্তভাবেই নির্বাচনে অংশ নেবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

ঈশ্বরদী পৌরসভায় নির্বাচিত প্রতিনিধি অনেকেই বসেছেন কিন্তু এ যাবৎ একটি গণপাঠাগার নির্মাণের উদ্যোগ কেউ নেননি। পৌর সুপার মার্কেটের পেছনে অবস্থিত টাউন হলটি (বর্তমানে সিনেমা হল) ভেঙে দিয়ে সেখানে সুন্দর একটি ডিজাইন করে বহুতল ভবন নির্মাণ করে নীচের তলায় মার্কেট এবং দ্বিতীয় তলায় অডিটোরিয়াম ও তৃতীয় তলায় পাবলিক লাইব্রেরি অনায়াসে হতে পারে। এ দাবি সচেতন নাগরিকদের।

এবারের নির্বাচনের প্রেক্ষাপট অনেকটাই পরিবর্তন হয়েছে। পৌরবাসী নির্বাচনের প্রার্থী বাছাইয়ে চিন্তা-ভাবনা করছেন। পৌর এলাকার রাস্তাঘাটের দূরাবস্থাসহ বিভিন্ন সমস্যায় সাধারণ মানুষ নাজেহাল। অন্যদিকে নাগরিকদের আধুনিক মানসিকতায় গড়ে তুলতে হলে একটি পাবলিক লাইব্রেরি নির্মাণ সর্বস্তরের মানুষের দাবিতে পরিণত হয়েছে। শিশুপার্ক নির্মাণ, মাহবুব আহমেদ খান স্মৃতি মঞ্চ উন্নয়ন, সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত শহর গড়ার প্রতিশ্রুতিতো সব প্রার্থীরই থাকে। কিন্তু প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী পরে আর কাজ হয় না।

অন্যান্যবারের তুলনায় এবার কাউন্সিলর প্রার্থীদের সংখ্যা বেশি হবে। তারা স্থানীয় সংবাদপত্রে শুভেচ্ছা বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে কয়েক মাস আগে থেকেই এলাকায় জনসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন।

এমজেড

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।