নগদ অর্থ সহায়তার তালিকায় স্বজনদের নাম, ইউপি সদস্যকে জরিমানা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি গাজীপুর
প্রকাশিত: ১০:১২ এএম, ০৯ জুন ২০২০

গাজীপুরের কাপাসিয়ায় প্রধানমন্ত্রীর দেয়া নগদ অর্থ সহায়তার তালিকায় নিজের স্বজনদের নাম ও ফোন নম্বর অন্তর্ভুক্ত করার অপরাধে এক ইউপি সদস্যকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। কাপাসিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোসা. ইসমত আরা সোমবার (৮ জুন) বিকেলে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে এ জারিমানা আদায় করেন।

ওই ইউপি সদস্যের নাম মো. আব্দুল বাতেন। তিনি কাপাসিয়া উপজেলার টোক ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নং ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার)।

জানা যায়, করোনাভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্ত ৫০ লাখ হতদরিদ্র পরিবারকে এককালীন আড়াই হাজার টাকা করে ১ হাজার ২৫০ কোটি টাকা নগদ সহায়তা প্রদানের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ টাকা পাওয়ার তালিকায় থাকার কথা রিকশাচালক, ভ্যানচালক, দিনমজুর, নির্মাণ শ্রমিক, কৃষি শ্রমিক, দোকানের কর্মচারী, ব্যক্তি উদ্যোগে পরিচালিত বিভিন্ন ব্যবসায় কর্মরত শ্রমিক, পোলট্রি খামারের শ্রমিক, বাস-ট্রাকের শ্রমিক ও হকারসহ নিম্ন আয়ের নানা পেশার মানুষ।

এ তালিকা তৈরী করেছে জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, ইউনিয়ন চেয়ারম্যান, সদস্য, শিক্ষক, সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত কমিটি। অনিয়ম রোধে বিকাশ, রকেট, নগদ ও সিওর ক্যাশের মতো মোবাইল আর্থিক সেবার মাধ্যমে ৫০ লাখ পরিবারের মধ্যে টাকা পৌঁছে দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়।

ঘোষণা অনুযায়ী গত ১৪ মে গণভবন থেকে মোবাইল ব্যাংকিং পরিষেবার মাধ্যমে সুবিধাভোগীদের হিসাবে সরাসরি নগদ অর্থ পাঠানোর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঈদুল ফিতরের আগেই এ নগদ সহায়তার টাকা তালিকাভুক্ত হতদরিদ্র পরিবারের পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সরকারের এ মহৎ প্রকল্প থেকে অনৈতিক সুবিধা নিতে কিছু জনপ্রতিনিধি নানাভাবে চেষ্টা করেন। কিছু অনিয়মের অভিযোগের কারণে তালিকা যাচাই করতে গিয়ে কিছুটা বিলম্ব ঘটে।

এমনি অনৈতিক সুবিধা নেয়ার চেষ্টা করেছেন কাপাসিয়ার টোক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মো. আব্দুল বাতেন। তিনি তার ওয়ার্ডের নামের তালিকায় নিজের ছয়জন স্বজনের নাম অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন। তারা প্রত্যেকেই প্রতি মাসে ২ হাজার ৫০০ টাকা ও ২০ কেজি চাল পাওয়ার কথা রয়েছে।

তালিকায় নাম থাকা ব্যক্তিরা হলেন- তার ছেলে মো. সাইফুল ইসলাম, ছেলের স্ত্রী মোছা. আনার কলি, সহোদর ভাই মো. সাহাবুদ্দিন, ভাইয়ের স্ত্রী রেনুজা খাতুন, ভাতিজা মো. কাউসার ও মো. ফারুক হোসেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গোপন সূত্রে বিষয়টি জানতে পেরে সোমবার বিকেলে ঘটনাস্থলে যান। এ সময় তিনি ঘটনার সত্যতা পেয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ইউপি সদস্য মো. আব্দুল বাতেনকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।

কাপাসিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোসা. ইসমত আরা জানান, ‘প্রধানমন্ত্রীর নগদ অর্থ সহায়তা’ কর্মসূচির টাকা আত্মসাতের উদ্দেশ্যে ইউপি সদস্য আব্দুল বাতেন তার নিজ পরিবারের ছয় সদস্যের নাম ও মোবাইল নম্বর অন্তর্ভুক্ত করে জমা দিয়েছিলেন। ইতোমধ্যে তিনি সেভাবেই নামগুলো আপলোড দিয়েছেন। এখন তাদের নাম তালিকা থেকে বাদ দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরে জানানো হবে।। এই অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় ‘দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন ২০১২’ এর ৩৯ ধারা আনুযায়ী তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে তা আদায় করা হয়েছে।

আমিনুল ইসলাম/আরএআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।