যে আসন খুঁজতে গিয়ে বাবার মৃত্যু সেই আসনে ছেলের জিপিএ-৫ অর্জন
বাবার মরদেহ দাফন করে এসএসসি পরীক্ষার হলে যাওয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার সেই আমিরুল ইসলাম জিপিএ-৫ পেয়েছে। চলতি বছর নবীনগর উপজেলার সলিমগঞ্জ এ.আর.এম উচ্চ বিদ্যালয় থেকে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সবকটি বিষয়ে এ প্লাস পেয়েছে সে।
বিদ্যালয়টি থেকে এবার ২২৪ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে কৃতকার্য হয়েছে ১৭৬ জন। এর মধ্যে ২৩ জন জিপিএ-৫ এবং ৯ জন গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছে।
এর আগে গত ২ ফেব্রুয়ারি বিকেলে আমিরুলের পরীক্ষার আসন বিন্যাস দেখতে সলিমগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে যান তার বাবা খোরশেদ আলম। এ সময় বিদ্যালয়ের গেটের উপরিভাগ খোরশেদের মাথায় ধসে পড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি।
বাবার মরদেহ দাফন করে বুকে পাথর চাপা দিয়ে পরদিন সকালে পরীক্ষার হলে যায় আমিরুল। এভাবেই বাবাকে হারানোর যন্ত্রণা দিয়ে সবকটি পরীক্ষা দেয় সে। রোববার (৩১ মে) পরীক্ষার ফলাফলে জিপিএ-৫ পেয়ে বাবার কথা মনে করে কান্নায় ভেঙে পড়ে আমিরুল।
আমিরুল জানায়, চার-ভাই বোনের মধ্যে সবার ছোট সে। তার বাবা তাদের ভাই-বোনের পড়ালেখা নিয়ে সবচেয়ে বেশি চিন্তা করতো। কিন্তু ছেলের পরীক্ষার আসন বিন্যাস দেখতে গিয়ে এভাবে বাবার মৃত্যু হবে সেটা মেনে নিতে পারছে না আমিরুল। কিন্তু বাবার জন্যই শোক ভুলে পরীক্ষা দিয়েছে সে। পরীক্ষার ফলাফল পেয়ে বাবার কথাই প্রথম মনে হয়েছে তার। সে ঢাকার নটরডেম কলেজে ভর্তি হয়ে তার পড়ালেখা এগিয়ে নিতে চায়।
সলিমগঞ্জ এ.আর.এম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আলী বলেন, আমার ২৫ বছরের শিক্ষকতা জীবনে সবচেয়ে বেশি খুশি হয়েছে আমিরুলের ফলাফলে। আমার নিজের ছেলেও এবারের পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছে। কিন্তু আমার ছেলের ফলাফলের চেয়ে আমিরুলের ফলাফলে আমি বেশি খুশি ও অভিভূত হয়েছি। মেধা এবং মনোবল নিয়ে সে অনেক দূর এগিয়ে যাবে।
আজিজুল সঞ্চয়/এমএএস/এসআর