ফেরি থেকে নেমেই নতুন বিড়ম্বনায় পড়ছেন ঢাকামুখিরা
বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের অফিস সহকারী মাইনুল ইসলাম। বাড়ি কুষ্টিয়া জেলায়। শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে ফেরি পার হয়ে পাটুরিয়া ঘাটে পৌঁছান তিনি। যাবেন গাবতলীতে। গণপরিবহণ বন্ধ থাকায় যাওয়ার জন্য প্রাইভেটকার অথবা মোটরসাইকেলই ভরসা। মোটরসাইকেলে ঝুঁকি বেশি। তাই আরও কয়েকজনের সঙ্গে প্রাইভেটকারে করেই রওনা হলেন গাবতলীর পথে। জনপ্রতি ভাড়া ৪০০ টাকা। অথচ স্বাভাবিক সময়ে পাটুরিয়া থেকে গাবতলী পযর্ন্ত বাসভাড়া মাত্র ৯০ টাকা।
সাভারের আশুলিয়ায় একটি পোশাক কারখানার শ্রমিক নাজমা বেগম। এলাকার কয়েকজন সহকর্মীর সঙ্গে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ফেরিঘাটে পৌঁছেছেন তিনি। কিন্তু নদী পার হয়ে পাটুরিয়া ঘাটে পৌঁছেই শিকার হন নানা বিড়ম্বনায়। ঘাট থেকে নবীনগর পর্যন্ত বাস ভাড়া নেয়া হতো মাত্র ৬০ টাকা। অথচ প্রাইভেটকারে ভাড়া চাচ্ছে ৩০০ টাকা।
মাইনুল ও নাজমার মতো শুক্রবার সকাল থেকেই পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌ-রুট হয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের হাজারো মানুষ কর্মস্থলে ফিরছেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘাটে যাত্রী ও ছোট গাড়ির চাপ বাড়তে থাকে। বাড়ি যাওয়ার মতো কর্মস্থলে ফেরার পথেও ফেরিতে গাদাগাদি করে পার হতে দেখা গেছে যাত্রীদের। মানা হচ্ছে না শারীরিক দূরত্বের বিধি নিষেধ। এতে বাড়ছে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি।
গণপরিবহন না থাকায় যাত্রীরা পাটুরিয়া ঘাটে পৌঁছে প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস ও মোটরসাইলযোগে গন্তব্যে যাচ্ছেন। তবে বাস বন্ধ থাকার সুযোগে ছোট গাড়ির চালকরা জনপ্রতি ভাড়া আদায় করছে ৪-৫ গুন বেশি। সুযোগে বেশি ভাড়া আদায় করা হলেও এসব দেখার জন্য প্রশাসনের কোনো তৎপরতা নেই।
বিআইডব্লিউটিসির আরিচা অঞ্চলের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) মো. জিল্লুর রহমান জানান, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌ-রুটে বর্তমানে ছোট বড় ১৬টি ফেরি সচল রয়েছে। তবে সকাল থেকে পারাপারে নিয়োজিত রয়েছে ৯টি ফেরি। যাত্রী ও যানবাহনের চাপ আরো বাড়লে ফেরি সংখ্যাও বাড়ানো হবে।
তিনি জানান, দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ থাকায় এবার যানবাহন পারাপারে কোনো সমস্যা হয়নি। ঘাটে এসেই ফেরিতে উঠতে পেরেছে ছোট যানবাহনগুলো। লঞ্চ বন্ধ থাকায় যাত্রীও পারাপার হচ্ছে ফেরিতে।
এদিকে পদ্মায় পানি বেড়ে ভাঙন কবলিত হওয়ায় পাটুরিয়ায় ৪টি ঘাটের মধ্যে দুটির পল্টুন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বর্তমানে ২ ও ৩ নম্বর ঘাট সচল রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ঘাটগুলো লো ওয়াটার থেকে মিড ওয়াটার লেভেলে স্থানান্তরের কাজ করছে বিআইডব্লিউটিএ। সন্ধ্যা নাগাদ সবকটি ঘাটই সচল হবে বলে জানান বিআইডব্লিউটিএর নির্বাহী প্রকৗশলী নিজামুদ্দিন পাঠান।
বি.এম খোরশেদ/এফএ/জেআইএম