বুধবার পাহাড়ের তিন জেলায় জেএসএস’র বর্জন কর্মসূচি
রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে অফিস-আদালত বর্জনের ডাক দিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস)। পার্বত্য তিন জেলায় বুধবার এ কর্মসূচি পালিত হবে।
কর্মসূচি সফল করতে এলাকার আপামর জনসাধারণের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি। `অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দিন, সফল করুন, অফিস-আদালত কর্মসূচি সফল করুন` স্লোগানে বিলি করা এক বিবৃতিতে অফিস-আদালত বর্জন কর্মসূচির ঘোষণা দেন জেএসএস। এ কর্মসূচিকে ঘিরে তিন পার্বত্য জেলায় বিরাজ করছে চাপা উত্তেজনা। আর জনমনে দেখা দিয়েছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা।
উল্লেখ্য, গত বছর নভেম্বর মাসে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়নে সরকারকে রোডম্যাপ ঘোষণা দেয়ার দাবি জানায় জনসংহতি সমিতি। অন্যথায় সরকারের বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলনে যাওয়ার হুমকি দেয় তারা। কিন্তু ওই সময়ে জনসংহতির বেধে দেয়া আল্টিমেটামের মধ্যে দাবির ব্যাপারে কোনো রকম সাড়া দেয়নি সরকার। এতে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী দাবি আদায়ে গত ১ মে থেকে সরকারের বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলনের সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেয় তারা।
আন্দোলনের অংশ হিসেবে এর আগে তিন পার্বত্য জেলায় হাটবাজার বর্জন, প্রতীকী অনশন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্র ধর্মঘট কর্মসূচি পালনসহ বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ করেছে জনসংহতি সমিতি। এবার দেয়া হল অফিস-আদালত বর্জন কর্মসূচি।
এ ব্যাপারে সংগঠনটির মুখপাত্র কেন্দ্রীয় সহ-তথ্য ও প্রচার সম্পাদক সজীব চাকমা বলেন, আমরা পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়নে সরকারের কাছে সময়সূচি ভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা ঘোষণার দাবি জানিয়ে ছিলাম। কিন্তু সরকার এগিয়ে আসেনি। তাই আমরা পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী অসহযোগ আন্দোলনে যেতে বাধ্য হয়েছি।
তিনি আরো জানান, তিন পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে সব ধরনের অফিস-আদালত বর্জন কর্মসূচির ডাক দেয়া হয়েছে। কর্মসূচি সফল করতে পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি-বাঙালি স্থায়ী জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত সহযোগিতা, সমর্থন ও অংশগ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে।
কর্মসূচির মাধ্যমে তিন পার্বত্য জেলার সব ধরনের অফিস-আদালত, ব্যাংক-বীমার কাজকর্ম অচল করে দেয়া হবে। এজন্য বুধবার অফিস-আদালতে, ব্যাংক-বীমায় যাওয়া এবং কাজকর্ম থেকে বিরত থাকার জন্য আপামর জনসাধারণসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছে জনসংহতি সমিতি। এরপরও যদি আমাদের দাবি বিবেচনায় সরকার এগিয়ে না আসে তাহলে সামনে আরও কঠোর ও কঠিন কর্মসূচি দিবো। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত একের পর এক কর্মসূচি দেয়া হবে। তীব্র গণ আন্দোলনে সরকারকে দাবি পূরণে বাধ্য করা হবে।
জনসংহতি সমিতির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পার্বত্য চট্টগ্রামে জুম্ম জনগণের জাতীয় ও জন্মভূমির অস্তিত্ব রক্ষায় এবং পার্বত্য চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জনসংহতি সমিতির নেতৃত্বে সরকারের বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেয়া হয়েছে।
সরকার পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নে কার্যকর উদ্যোগ বা সময়সূচি ভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা না করা পর্যন্ত জুম্ম জনগণ আন্দোলন চালিয়ে যাবে। চলমান এই আন্দোলনের অংশ হিসেবে পার্বত্য চুক্তি বিরোধী ও জুম্ম স্বার্থ পরিপন্থী কার্যক্রম প্রতিরোধে প্রতিবিধান করা হবে বলে ওই বিবৃতিতে জানানো হয়।
সুশীল প্রসাদ চাকমা/এআরএ/আরআইপি