ঈদের দিন সকালের ঝড়ে তিন শতাধিক বাড়ি-ঘর বিধ্বস্ত
নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঝড়ে প্রায় তিন শতাধিক বসতঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। এ সময় নারী-শিশুসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। প্রায় ১০ মিনিট স্থায়ী এ ঝড়ে বোরো ফসলসহ গাছপালার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সোমবার সকাল সাড়ে আটটায় শুরু হয়ে এ ঝড়।
আহতদের মধ্যে মল্লিকপুর গ্রামের মৃত জয়নাব আলীর স্ত্রী কাঞ্চনের মা (৬৫) ও একই গ্রামের স্বপন মিয়ার পাঁচ বছরের শিশু ছেলে কাইয়ুমের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা গেছে, সকাল সাড়ে আটটায় হঠাৎ করে ঝড় বৃষ্টি শুরু হয়। প্রায় ১০ মিনিট স্থায়ী এ ঝড়ে সাতটি ইউনিয়নের সুনই, গোয়াতলা, বরতলি, মুনসুরপুর, নারায়ণপুর, বানিয়াজান, আটিকান্দা, নুনেশ্বর, মল্লিকপুর, দেওগাঁও, পোখলগাঁও, অভয়পাশা, সীতারামপুর, পাহাড়পুর, স্বমুশিয়াসহ অন্তত ২৫টি গ্রামের প্রায় তিন শতাধিক কাঁচা ঘর বিধ্বস্ত ও অনেক গাছপালার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। একই সঙ্গে পল্লীবিদ্যুতের বেশ কিছু তারের উপর গাছের ডালপালা পড়ে যাওয়ায় বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
এছাড়া বিভিন্ন সড়কে গাছ পড়ে থাকায় ওইসব সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। পাশাপাশি ঝড়ে বোরো ফসল ও গাছের আম-কাঁঠালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
আটপাড়া ডিগ্রি কলেজের রসায়ন বিভাগের প্রভাষক ও পুখলগাঁও গ্রামের বাসিন্দা মো. মনিরুজ্জামান বাবুল বলেন, সকাল সাড়ে আটটায় গোসল করে ঈদের নামাজের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছিল। হঠাৎ প্রচণ্ড বেগে ঝড়-বৃষ্টি শুরু হয়। ১০ মিনিট স্থায়ী এ ঝড়ে উপজেলার ২৫টি গ্রামে প্রায় তিন শতাধিক ঘর বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। আহত হয়েছেন ১০ জনের মতো।
তিনি জানান, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত নুনেশ্বর, স্বমুশিয়া, বানিয়াজান ও সুনই ইউনিয়নে। এ ছাড়া উপজেলার অন্য তিনটি ইউনিয়নেও আংশিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
এ বিষয়ে আটপাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. খায়রুল ইসলাম বলেন, ঝড়ে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে এক শিশু ও এক বৃদ্ধ নারীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিরা প্রাথমিকভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন।
তিনি জানান, ঝড়ে ঘর-বাড়ির পাশাপাশি উঠতি বোরো ফসল ও ফলন্ত আম-কাঁঠাল গাছেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অসংখ্য গাছপালা উপড়ে পড়ায় নেত্রকোনা-আটপাড়া সড়কসহ বেশকিছু গ্রামীণ রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে। বেশ কিছু বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়ায় বিভিন্ন গ্রামে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয়সহ এসব বিভিন্ন বিষয় সমাধানে কাজ চলছে।’
আটপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহফুজা সুলতানা বলেন, ঝড়ে কয়েকজন আহত ও বেশ কিছু এলাকায় ঘর-বাড়িসহ গাছপালার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে ক্ষয়ক্ষতির সম্পূর্ণ বিবরণ এখনও পাইনি। এ বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, উপজেলায় এর আগে গত ১৫ মে দুপুরে ঝড়ে প্রায় দুই শতাধিক ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত হয়।
এইচ এম কামাল/এমএএম/পিআর