মেহেরপুরের আম-লিচু চাষিদের সর্বনাশ করে গেল আম্ফান

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি মেহেরপুর
প্রকাশিত: ০৫:৫৬ পিএম, ২১ মে ২০২০

ঘূর্ণিঝড় আম্ফান দেশের চাষিদের ব্যাপক ক্ষতি করে গেছে। বিশেষ করে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছেন আম-লিচুর চাষিরা। কারণ দেশের বিভিন্ন জেলায় ঝড়ের তাণ্ডবে ঝরে পড়েছে আম, ফাটল ধরেছে লিচুতে।

মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কামরুল হক মিয়া জানান, আম ও লিচুর কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা নিরূপণে কৃষি কর্মকর্তার মাঠে রয়েছেন। তারা তথ্য দিলে তাদের মাধ্যমে প্রকৃত ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা যাবে।

তিনি বলেন, ধারণা করা হচ্ছে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ আমের ক্ষতি হবে। ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের তালিকা করা হচ্ছে। জেলায় দুই হাজার ৬শ হেক্টর জমিতে লিচু ও ২ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে আমের বাগান রয়েছে।

মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সামাদুল ইসলাম জানান, আম্ফানের প্রভাবে বুধবার বিকেল থেকে শুরু হয় বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়া। রাত ৯টার দিকে মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা অঞ্চলে আম্ফান আঘাত হানে। ঝড়ের তাণ্ডব চলে রাত ১টা পর্যন্ত। ঝড়ের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৮২ কিলোমিটার। এ অঞ্চলে বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ২০৩ মিলিমিটার।

Meherpur-1

হতাহতের ঘটনা তেমন না থাকলেও আম্ফানে আম-লিচুর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে জানান জেলা প্রশাসক আতাউল গনি। তিনি বলেন, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা হচ্ছে।

এছাড়া কলা, পাট, পটলসহ বিভিন্ন ধরনের ফসলের ক্ষতি হয়ছে। মেহেরপুর সদর উপজেলার আমঝুপি গ্রামের আম চাষি সাখাওয়াত হোসেন জানান, ঝড়ে আমের ডালপালা ভেঙে পড়েছে। গাছ থেকে পড়ে গেছে অধিকাংশ আম। একদিকে করোনা অন্যদিকে আম্ফান ঝড়ে আম চাষিরা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে।

আরেক আম বাগান মালিক সাইদুর রহমান শাহীন জানান, তিনি হিমসাগর, ল্যাংড়া, বোম্বাই, আম্রপালিসহ ৬০ বিঘা জমিতে আমের পরিচর্যা করেছেন। গতকাল ঝড়ে অধিকাংশ আম ঝরে পড়েছে। ভেঙে পড়েছে আম গাছের ডালপালা। গাছের বড় আম সব ঝরে গেছে। বাগানের দিকে তাকালে মনে হচ্ছে বড় কোনো আম গাছে নেই।

সদরের ঝাউবাড়িয়া গ্রামের লিচু চাষি রায়েদুল জানান, তার চার বিঘা জমিতে লিচু ছিল। গতকাল ঝড়ে ৬০ ভাগ গাছের লিচু ফেটে গেছে। গাছ থেকে লিচু ঝরে পড়েছে। এ বছর করোনার কারণে বাইরের জেলা থেকে কোনো ব্যবসায়ী জেলায় আসেনি। যার কারণে আগাম লিচুর বাগান বিক্রি করতে পারেননি।

মেহেরপুরের সদরের কলা চাষি রাশিদুল জানান, তিনি এ বছর তিন বিঘা জমিতে কলার আবাদ করেছেন। তার ৮৫ ভাগ কলার গাছ ভেঙে পড়েছে। তিনি এ বছর ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়বেন।

আসিফ ইকবাল/এমএসএইচ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।