গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও থেমে নেই ঈদযাত্রা
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে বন্ধ রয়েছে গণপরিবহন। তবে থেমে নেই মানুষের ঈদযাত্রা। আসন্ন ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে সড়কে ঘরমুখো মানুষের ঢল নেমেছে। ঢাকা, গাজীপুরসহ আশপাশের জেলাগুলো থেকে ইতোমধ্যেই বাড়িতে ফিরতে শুরু করেছে মানুষ।
মঙ্গলবার (১৯ মে) সকালে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের তারটিয়া ও আশেকপুর বাইপাস এলাকায় দেখা গেছে ঘরমুখো মানুষের ভেঙে ভেঙে বাড়ি যাওয়ার প্রতিযোগিতা। বাড়তি ভাড়া দিয়ে লেগুনা, সিএনজি ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় চড়ে তারা ছুটছেন নিজ নিজ গন্তব্যে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, গণপরিবহন বন্ধ থাকার সুযোগ নিয়ে আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে আশেকপুর বাইপাস এলাকায় রীতিমত বসেছে লেগুনা, সিএনজি আর ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার স্ট্যান্ড। এ স্ট্যান্ড থেকে ভোর থেকে রাত পর্যন্ত এলেঙ্গা ও ভূঞাপুর পর্যন্ত যাত্রী পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। এছাড়াও মির্জাপুর থেকে লেগুনা অথবা সিএনজিতেও এলেঙ্গা আর ভূঞাপুর পর্যন্ত যাতায়াত করছেন যাত্রীরা। তবে বাড়তি ভাড়া গুনতে হচ্ছে যাত্রীদের।
এ সময় কথা হয় গাজীপুর ও আব্দুল্লাহপুর থেকে রওনা দেয়া বগুড়ার যাত্রী মাইনুল ইসলাম, আল আমিন, কুড়িগ্রামের যাত্রী সবুজ মিয়া আর সিরাজগঞ্জের যাত্রী মমতাজ বেগমের সঙ্গে।
তারা জানান, বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন তারা। ঈদকে সামনে রেখে অফিস ছুটি থাকায় বাড়ি ফিরছেন তারা। তবে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় এভাবে ভেঙে ভেঙে বাড়ি যাচ্ছেন। এতে তাদের বাড়তি টাকা খরচ আর সময় নষ্ট হচ্ছে। তবে পরিবার নিয়ে ঈদ করার জন্যই তাদের এই যাত্রা।
তবে কীভাবে সেতু পারাপার হবেন এমন প্রশ্নের জবাবে তারা জানান, ভূঞাপুর থেকে নৌ পথে সিরাজগঞ্জ পৌঁছে আবার ভেঙে ভেঙে যেতে হবে। গণপরিবহনে তাদের যেখানে ভাড়া লাগতো সাড়ে তিনশ থেকে সাড়ে চারশ টাকা এখন সেখানে আটশ থেকে এক হাজার টাকা খরচ হবে।
লেগুনা চালক সোহেল মিয়া জানান, মির্জাপুর থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত জনপ্রতি দেড়শ টাকা ভাড়া নিচ্ছেন।
বাড়তি ভাড়া নেয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, সড়কে পুলিশ আর মোবাইল কোর্টের ভয় নিয়ে মহাসড়কে চলতে হচ্ছে। এ কারণে একটু বেশি ভাড়া নিচ্ছেন।
অটোরিকশা চালক রফিক, কবিরসহ কয়েকজন জানান, টাঙ্গাইল থেকে এলেঙ্গার ভাড়া জনপ্রতি ৪০ টাকা হলেও এখন তারা নিচ্ছেন ৫০ টাকা।
বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) ইফতেখার রোকন বলেন, গণপরিবহন বন্ধ থাকা সত্ত্বেও ঈদকে সামনে রেখে এ মহাসড়কে যাত্রী বেড়েছে। এ সুযোগে প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস আর কেউ কেউ অসুস্থতার দোহাই দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে বাড়ি ফিরছেন। সন্দেহজনক কিছু গাড়ি প্রবেশে বাধা দেয়া হলেও বেশির ভাগ গাড়িই সেতু দিয়ে পার হচ্ছে। তবে নদী পথে কীভাবে যাত্রী পারাপার হচ্ছে সে ব্যাপারে কিছুই জানেন না তিনি।
এ প্রসঙ্গে ভূঞাপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাশিদুল ইসলাম বলেন, নৌ চলাচল বন্ধে বঙ্গবন্ধু সেতু নৌ পুলিশ ফাঁড়ি আর গোবিন্দাসী পুলিশ ফাঁড়িকে তৎপর থাকতে বলা হয়েছে। এ পথে কোনো ধরণের নৌ চলাচল করবে না বলেও জানান তিনি।
আরিফ উর রহমান টগর/আরএআর/জেআইএম