সিলেটে ‘পাঁঠা কাণ্ডে’ সাবেক আ.লীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক সিলেট
প্রকাশিত: ০৮:১৫ এএম, ১২ মে ২০২০
রনজিত সরকার ও কনক পাল

সিলেট ছাগল উন্নয়ন খামারে প্রজননের জন্য আনা উন্নতজাতের একটি পাঁঠা খাওয়ার জন্য ফ্রি না দেয়ায় জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা কাজী আশরাফের ওপর হামলার ঘটনায় জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট রনজিত সরকারকে প্রধান আসামি করে ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এ ঘটনায় সিলেটের রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড় চলছে। অন্যদিকে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।

সোমবার (১১ মে) রাতে প্রাণিসম্পদ অধিদফতর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক ড. আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে নগরীর শাহপরান থানায় মামলাটি করেন। মামলায় রনজিত সরকারসহ ১০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৮-১০ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার অন্য আসামিরা ছাত্রলীগ ও যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।

মামলা দায়েরের পর মধ্যরাতে টিলাগড় এলাকা থেকে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা কনক পাল অরূপকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আটক কনক সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক।

মামলার এজাহারে বলা হয়, সোমবার দুপুরে নগরের টিলাগড়ে সিলেট বিভাগীয় ছাগল উন্নয়ন ও গবেষণা খামারে কয়েকজন যুবককে পাঁঠান সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট রনজিত সরকার। যুবকরা খামারে প্রজননের জন্য আনা উন্নতজাতের একটি পাঁঠা রনজিতের খাবারের জন্য ফ্রি দেয়ার জন্য প্রাণিসম্পদ অধিদফতর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক ড. আমিনুল ইসলামের কাছে আবদার করেন। ড. আমিনুল পাঁঠা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা গালিগালাজ করে চলে যান।

কিছুক্ষণ পর দলবল নিয়ে রনজিত সরকার সেখানে গিয়ে কর্মকর্তাদের ওপর চড়াও হন। এ সময় তিনি অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা কাজী আশরাফের ওপর হামলা চালান। অফিসের অন্য কর্মকর্তাদেরও লাঞ্ছিত করেন তারা। এ ঘটনায় আহত জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা কাজী আশরাফকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

এদিকে এ ঘটনার পর জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলামের মধ্যস্ততায় সমঝোতার চেষ্টা চালান জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা। কিন্তু হামলায় আক্রান্ত কর্মকর্তারা সমঝোতায় রাজি না হওয়ায় এ প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। পরে রাতে বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ অধিদফরের পক্ষ থেকে উপ-পরিচালক ড. আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে শাহপরান থানায় মামলা করেন।

শাহপরান থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল কাইয়ূম চৌধুরী বলেন, ঘটনার সংবাদ পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। তবে সেখানে পুলিশ পৌঁছার আগেই হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। এ বিষয়ে থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। এতে ১০ জনের নাম উল্লেখসহ আরও অজ্ঞাত ৮-১০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে কনক পাল অরূপ নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেফতারে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।

ছামির মাহমুদ/আরএআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।