কক্সবাজারে জব্দকৃত ৩০০ বস্তা চাল নিয়ে চালবাজি
কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার টৈটং ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা জাহেদুল ইসলাম চৌধুরীর স্বাক্ষরে তোলা ৩০০ বস্তা চাল বারবাকিয়া ইউনিয়ন থেকে জব্দ করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। রোববার (২৬ এপ্রিল) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার বারবাকিয়া হোসনে আরা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ভবণ থেকে চালের বস্তাগুলো জব্দ করা হয়। জব্দকৃত চাল নিয়ে ধূম্রজাল তৈরি হয়েছে। চলছে চালবাজি।
অভিযুক্ত চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম চৌধুরী বলছেন, ইউএনও তার কাছ থেকে একটি স্বাক্ষর নিয়েছেন। এর বাইরে তিনি কিছুই জানেন না।
পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাঈকা সাহাদত জানান, চাল জব্দের বিষয়ে তিনি অবগত নন। যদি চালগুলো সরকারি হয়ে থাকে, তাহলে সেই চাল তিনি ইউএনও হিসেবে নিয়ম মেনে বরাদ্দ দিয়েছেন কি-না সেটাই দেখার বিষয়।
পেকুয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল আজম জানান, জব্দকৃত চালভর্তি বস্তাগুলো পুলিশ পাহারায় রাখা হয়েছে। চালগুলোর কাগজপত্র দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
যে স্কুল ভবণ থেকে চাল জব্দ হয়েছে সেই হোছনে আরা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোস্তফা আলী জানান, রাত ১টার দিকে পেকুয়া থানা পুলিশ তাকে স্কুলে ডেকে নিয়ে স্কুলে রাখা ১৫ টন চাল তার জিম্মায় দেন। এর আগে রাত ৯টার দিকে স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি ওয়াহিদুর রহমান ওয়ারেচি স্কুলের নাইট গার্ডের কাছ থেকে চাবি নিয়ে চালের বস্তাগুলো স্কুলের ভেতরে রাখেন। স্কুলে চালের বস্তা রাখার বিষয়ে তিনি আগে কিছুই জানতেন না বলে জানান।
তিনি আরও জানান, জিম্মানামায় বারবাকিয়া ইউনিয়ন পরিষদের দুইজন মেম্বার ও স্থানীয় একজন যুবলীগ নেতাকে সাক্ষী করা হয়েছে।
স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি ওয়াহিদুর রহমান ওয়ারেচি চালগুলো স্কুলের বলে দাবি করেছেন। তিনি জানান, বিদ্যালয়ের মাঠ ভরাটের জন্য ১১৭ দশমিক ৪২ মেট্রিক টন চাল বরাদ্ধ দেয়া হয়। ওই মাঠ ভরাট কাজের পিসি হচ্ছেন তিনি। জব্দকৃত চালসমূহ ওই প্রকল্পের বলে দাবি করেন তিনি।
এদিকে ওয়াহিদুর রহমান ওয়ারেচির দাবি মতে উদ্ধার করা চালগুলো স্কুলের হলে টৈটং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা জাহেদুল ইসলাম চৌধুরীর স্বাক্ষরে তোলা চালগুলো কোথায় গেল সে প্রশ্ন তুলেছেন সচেতন মহল।
জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, বিষয়টা আমিও শুনেছি। তবে চালগুলো কিসের এবং কত কেজি সেটা এখনও নিশ্চিত নয়। পেকুয়া-চকরিয়ার ত্রাণের বিষয়টি সমন্বয় করেন এডিসি (রাজস্ব)। ওনাকে ঘটনাস্থলে গিয়ে তা খতিয়ে দেখতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. আশরাফুল আফসার বলেন, আমি পেকুয়ার উদ্দেশ্যে কক্সবাজার থেকে রওয়ানা দিয়েছি। বিকেল নাগাদ বিষয়টির সর্বশেষ জানা যাবে বলে আশা করছি।
সায়ীদ আলমগীর/আরএআর/জেআইএম