জামালপুর কারাগারের ঝুঁকিপূর্ণ নারী ওয়ার্ড পরিত্যক্ত
একশ পনের বছরের পুরাতন জামালপুর জেলা কারাগার ঝুঁকির মধ্য দিয়েই তার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে এই কারাগারের নারী ওয়ার্ড পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। অপরদিকে কারাগারের প্রশাসনিক ভবনটিও বেশ জরাজীর্ণ হয়ে পড়ায় আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন কারাবন্দি, কারারক্ষী ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইতোমধ্যে ঊর্ধ্বতন কারা কর্তৃপক্ষের নির্দেশে নারী কয়েদীদেরকে পার্শ্ববর্তী শেরপুর জেলা কারাগারে স্থানান্তর করা হয়েছে।
জামালপুর জেলা কারাগার সূত্রে জানা যায়, ১৮৯৯ সালে একটি প্রশাসনিক ভবন, দুটি পুরুষ ও একটি নারী ওয়ার্ড নিয়ে এ কারাগারের কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে এ কারাগারে তিনটি পাকা, তিনটি টিনশেড ভবনের পুরুষ ওয়ার্ডগুলোতে কারাবন্দির ধারণক্ষমতা ২৯১ জন এবং পাকা ভবনের নারী ওয়ার্ডের কারবন্দির ধারণক্ষমতা মাত্র ১৬ জন।
প্রশাসনিক ভবন ও একমাত্র নারী ওয়ার্ডটি ১১৫ বছরের পুরাতন হওয়ায় ভবনের দেয়াল, ছাদ ও বিমসহ বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। এছাড়াও ভবনের দরজা ও জানালাগুলোও জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ভবনের ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ছে। ফলে জরাজীর্ণ একমাত্র নারী ওয়ার্ডটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় গত বছরের মে মাসে এটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। এরপরও নারী ওয়ার্ডে নারী কয়েদিদের অনেকটা বাধ্য হয়েই রাখা হতো। পরবর্তীতে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আনলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আইজি প্রিজনের অনুমতি সাপেক্ষে নারী কারাবন্দিদেরকে এখন পার্শ্ববর্তী শেরপুর জেলা কারাগারে রেখে আসতে হচ্ছে।
অপরদিকে, এ কারাগারে পুরুষ ওয়ার্ডের টিনশেড ভবনগুলোও জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। জেল সূত্রে আরো জানা যায়, এ কারাগারে কারাবন্দীর ধারণ ক্ষমতা ৩০৭ জন হলেও প্রায় প্রতিদিনই এখানে কারাবন্দি ধারণ ক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি থাকে। কারাগারের পূর্ব-দক্ষিণ পাশে সীমানা প্রাচীর না থাকায় নানাবিধ সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। তাছাড়াও কারাগারে পৃথক কোনো সেল না থাকায় দুর্ধর্ষ ও একাধিক মামলায় আটক বন্দিদের নিয়ে কারা কর্তৃপক্ষকে সব সময় উদ্বিগ্ন থাকতে হচ্ছে।
দীর্ঘদিনের পুরাতন ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে প্রশাসনিক কাজ করতে প্রতিনিয়ত নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এসব সমস্যা সমাধানের জন্য ইতোমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে বলে জানা যায়। এছাড়াও কারাগারের বিভিন্ন আগ্নেয়াস্ত্রসহ প্রয়োজনীয় মালামাল পুরাতন ছোট একটি কক্ষে রক্ষিত রয়েছে। নিরাপদে আগ্নেয়ান্ত্র রাখার জন্য একটি আধুনিক অস্ত্রাগার নির্মাণেরও প্রয়োজন।
মেহেদি হাসান/এমজেড/পিআর