৩৩৩ নম্বরে ফোন করে খাদ্য সহায়তা চাইলেন বিত্তবানের ছেলে

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি সুনামগঞ্জ
প্রকাশিত: ০৯:২১ এএম, ১৮ এপ্রিল ২০২০

মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে সবকিছু বন্ধ থাকায় কর্মহীন হয়ে পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষ। অসহায় ও গরিবরা চরম খাদ্য সংকটে রয়েছে। তাদের জরুরি সেবা প্রদানের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ৩৩৩ এবং ৯৯৯ এই দুটি নম্বর সচল রাখা হয়েছে। তবে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার এক বিত্তবানের ছেলে ৩৩৩ নম্বরে ফোন করে নিজেকে অসহায় পরিচয় দিয়ে খাদ্য সহায়তার জন্য অনুরোধ করেছেন।

শুক্রবার (১৭ এপ্রিল) রাতে তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের মোদেরগাঁও গ্রামের বাসিন্দা বিত্তবান আব্দুস সোবহানের ছেলে নুরুল হক জীবন এমন কাণ্ড করেন। পরে উপজেলার প্রশাসন থেকে খাদ্য সামগ্রী নিয়ে গেলে তিনি এ ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। পরবর্তীতে খাদ্য সামগ্রী তার বাবা গ্রহণ করেন।

জানা যায়, ৩৩৩ নম্বরে ফোন করে খাদ্য সহায়তা চেয়ে নুরুল হক জীবন ফোন দেয়ার পর বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানো হয় এবং জরুরি ভিত্তিতে খাদ্য সহায়তা দেয়ার জন্য বলা হয়। এরই প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিজেন ব্যানার্জী স্থানীয় ইউপি সদস্য জাকির হোসেনকে সহায়তা চাওয়া পরিবার সম্পর্কে খোঁজ নিতে বলেন। ইউপি সদস্য ওই পরিবার সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন- পরিবারটি স্বচ্ছল এবং বিত্তবান। তাদের কোনো খাদ্য সহায়তার প্রয়োজন নেই।

কিন্তু সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী খাদ্য সহায়তা চাওয়া পরিবারকে খাবার দেয়া বাধ্যতামূলক হওয়ায় খাবার নিয়ে আব্দুস সোবহানের বাড়িতে যান উপজেলা প্রশাসনের লোকজন। বাড়িতে খাবার নিয়ে আসার পর তার ছেলে নুরুল হক জীবন ব্রিবতবোধ করেন এবং তিনি তার ভুলের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। পরবর্তীতে খাদ্য সামগ্রী তার বাবার কাছে দিয়ে তা গরিবদের দিয়ে দিতে বলা হয়।

নুরুল হক জীবন জানান, অসহায় মানুষের মধ্যে কত দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকার খাবার পাঠাচ্ছে তা দেখার জন্য তিনি এ কাজ করেছেন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য জাকির হোসেন বলেন, এ গ্রামের মধ্যে নুরুল হক জীবনের পরিবার বিত্তশালী। তাদের কোনো খাদ্য সংকট নেই। তারপরও দেশের এ ক্রান্তিলগ্নে ৩৩৩ নম্বরে কল করে এমন কাজ সত্যিই দুঃখজনক।

তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিজেন ব্যানার্জী বলেন, ৩৩৩ নম্বরে কল করে খাদ্য সহায়তা চাওয়ার পর আমরা জরুরি ভিত্তিতে তার বাড়িতে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছানোর পর জানতে পারি পরিবারটি গ্রামের মাঝে অত্যন্ত স্বচ্ছল ও বিত্তবান। অবশ্য পরে তাদের এমন কর্মকাণ্ডে খাদ্য সহায়তা চাওয়া লোকটি দুঃখ প্রকাশ করেছেন। আমরা তাদের চাওয়া খাদ্য ফিরিয়ে না এনে খাবারগুলো গরিব মানুষকে নিজের হাতে দিয়ে দিতে বলেছি।

মোসাইদ রাহাত/আরএআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।