করোনায় মৃত্যুর পরও লকডাউন হয়নি যেসব জেলা

জাগো নিউজ ডেস্ক
জাগো নিউজ ডেস্ক জাগো নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯:৩৩ পিএম, ১৬ এপ্রিল ২০২০

মহামারি করোনাভাইরাসে দেশে এ পর্যন্ত ৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সঙ্গে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন এক হাজার ৫৭২ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মৃত্যু হয়েছে ১০ জনের; আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন আরও ৩৪১ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৪৯ জন।

এরই মধ্যে বিভিন্ন জেলায় বেড়েছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। যদিও করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে দেশের বিভিন্ন জেলা লকডাউন (অবরুদ্ধ) ঘোষণা করা হয়েছে। এরপরও করোনার সংক্রমণ ঠেকানো যাচ্ছে না। করোনার সংক্রমণ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিদিনই বাড়ছে লকডাউন ঘোষিত জেলার সংখ্যা। ইতোমধ্যে দুই বিভাগের সবকটি জেলা লকডাউন করে দেয়া হয়েছে।

একই সঙ্গে পরিস্থিতি বিবেচনা করে এক বা একাধিক উপেজেলা লকডাউন করা হয়েছে। লকডাউন ঘোষিত জেলাগুলোতে অন্য জেলা থেকে লোকজনের আসা-যাওয়া এবং জেলার আভ্যন্তরীণ চলাচলও নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। সব মিলিয়ে ৬৪ জেলার মধ্যে এখন পর্যন্ত ৪০টি জেলা লকডাউন করা হয়েছে।

সবশেষ বৃহস্পতিবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে মাদারীপুর জেলা লকডাউন ঘোষণা করা হয়। জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুল ইসলাম এক গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ ঘোষণা দেন। আজ রাত ১০টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এই আদেশ বহাল থাকবে বলেও জানানো হয়েছে। এর আগে জেলার তিনটি উপজেলা লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছিল।

নয়জন করোনা রোগী শনাক্তের পর বুধবার (১৫ এপ্রিল) রাত থেকে শেরপুর জেলা লকডাউন ঘোষণা করা হয়। জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট আনার কলি মাহবুব স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত পাঁচটি উপজেলাসহ শেরপুর জেলা লকডাউন থাকবে।

ঢাকা বিভাগ :

করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ঢাকা বিভাগে। এজন্য ঢাকা বিভাগের ১০টি জেলা লকডাউন করা হয়েছে। শুধু ঢাকা জেলায় আক্রান্ত হয়েছেন ৬৩৬ জন। এরপরের অবস্থানে নারায়ণগঞ্জ রয়েছে। এই জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা ২৫৫ জন। ইতোমধ্যে নারায়ণগঞ্জ লকডাউন এবং ঢাকায় প্রবেশ-প্রস্থান সীমিত করা হয়েছে। কার্যত লকডাউনে রয়েছে ঢাকাও

পাশাপাশি গাজীপুর, নরসিংদী, শরীয়তপুর, টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, রাজবাড়ী, মাদারীপুর ও গোপালগঞ্জ লকডাউনে রয়েছে। এসব জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা যথাক্রমে ৮২, ৪৩, ৬, ৯, ২২, ২৬, ৭, ২৩ ও ১৭। তবে মানিকগঞ্জে পাঁচজন, ফরিদপুরে দুজন আক্রান্ত হলেও লকডাউন করা হয়নি।

চট্টগ্রাম বিভাগ :

এ পর্যন্ত চট্টগ্রাম বিভাগের আট জেলা লকডাউন করা হয়েছে। জেলাগুলো হলো- কুমিল্লা, ফেনী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নোয়াখালী, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, কক্সবাজার ও খাগড়াছড়ি। এসব জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা যথাক্রমে ১৪, (ফেনীতে আক্রান্ত নেই), ৮, ২, ৭ ও ১। কিন্তু চট্টগ্রামে ৩৬ জন করোনায় আক্রান্ত ও তিনজনের মৃত্যু হলেও লকডাউন করা হয়নি। তবে কিছু উপজেলা লকডাউন করা হয়েছে। একই ভাবে কক্সবাজারে একজন আক্রান্ত হলেও লকডাউন করা হয়নি। খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে কেউ এখনও আক্রান্ত না হওয়ায় লকডাউনের বাইরে রয়েছে।

সিলেট বিভাগ :

সিলেট বিভাগের সব জেলা লকডাউন। সিলেট, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও সুনামগঞ্জে আক্রান্তের সংখ্যা যথাক্রমে ৩, ১, ২ ও ১। গতকাল বুধবার সুনামগঞ্জের এক চিকিৎসকের করোনায় মৃত্যু হয়েছে।

ময়মনসিংহ বিভাগ :

ময়মনসিংহ বিভাগের সব জেলা লকডাউন। ময়মনসিংহ, শেরপুর, জামালপুর ও নেত্রকোনায় আক্রান্তের সংখ্যা যথাক্রমে ৯, ৩, ১২ ও ৬।

রাজশাহী বিভাগ :

রাজশাহী বিভাগের মাত্র দুই জেলা লকডাউন। দুই জেলা হলো রাজশাহী ও নওগাঁ। এর মধ্যে রাজশাহীতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা চারজন। নওগাঁয় কেউ আক্রান্ত হয়নি। একইভাবে সিরাজগঞ্জ, পাবনা, বগুড়া, নাটোর, জয়পুরহাট, চাঁপাইনবাবগঞ্জে কেউ আক্রান্ত না হওয়ায় লকডাউন করা হয়নি।

খুলনা বিভাগ :

খুলনা বিভাগের ১০ জেলার মাত্র চার জেলা লকডাউন। জেলাগুলো হলো- খুলনা, যশোর, সাতক্ষীরা ও চুয়াডাঙ্গা। তবে এই বিভাগের কয়েকটি জেলায় বাইরের কোনো ব্যক্তি ও যানবাহন প্রবেশ-প্রস্থান করতে পারবে না। লকডাউন করা চার জেলায় খুলনা ও চুয়াডাঙ্গায় একজন করে আক্রান্ত; যশোর ও সাতক্ষীরায় নেই। তবে নড়াইলে একজন আক্রান্ত হলেও লকডাউন করা হয়নি। পাশাপাশি মেহেরপুর, কুষ্টিয়া, মাগুরা, বাগেরহাট ও ঝিনাইদহে আক্রান্ত নেই বলে লকডাউন করা হয়নি।

বরিশাল বিভাগ :

বরিশাল বিভাগের ছয় জেলার মাত্র দুই জেলা লকডাউন। সেগুলো হলো- বরিশাল ও পিরোজপুর। লকডাউন ঘোষিত দুই জেলা ছাড়াও বিভাগের অন্য কয়েকটি প্রবেশ ও ঢোকার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। লকডাউন করা দুই জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা যথাক্রমে ১২ ও ৪। তবে বরগুনায় চারজন আক্রান্ত ও একজনের মৃত্যু, ঝালকাঠিতে তিনিজন ও পটুয়াখালীতে দুজন করোনায় আক্রান্ত হলেও লকডাউন করা হয়নি। ভোলায় করোনা শনাক্ত না হওয়ায় লকডাউনমুক্ত রয়েছে।

রংপুর বিভাগ :

রংপুর বিভাগের আট জেলার পাঁচ জেলা লকডাউন। জেলাগুলো হলো- রংপুর, দিনাজপুর, নীলফামারী, গাইবান্ধা ও ঠাকুরগাঁও। এসব জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা যথাক্রমে ৩, ৮, ৬, ১৩ ও ৩। তবে কুড়িগ্রামে দুজন ও লালমনিরহাটে দুজন করোনায় আক্রান্ত হলেও লকডাউন করা হয়নি। পাশাপাশি করোনা শনাক্ত না হওয়ায় লকডাউনমুক্ত রয়েছে পঞ্চগড়।

এএম/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।