গ্রামবাসী খাটিয়া না দেয়ায় মরদেহ মাটিতে রেখে জানাজা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ঝিনাইদহ
প্রকাশিত: ০৭:২৯ পিএম, ১২ এপ্রিল ২০২০

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলায় করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া এক বৃদ্ধের মরদেহ মাটিতে রেখেই জানাজা পড়া হয়েছে। গ্রামবাসী মসজিদের খাটিয়া না দেয়ায় মরদেহ মাটিতে রেখে জানাজা পড়ানো হয়।

শনিবার (১১ এপ্রিল) রাত ১১টার দিকে কালীগঞ্জ উপজেলার খাঞ্জাপুর গ্রামের এক বৃদ্ধকে শ্বাসকষ্ট, জ্বর, ঠান্ডা ও কাশি নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এরপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নমুনা সংগ্রহসহ বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা শেষে রোববার সকালে পরিবারের স্বজনদের কাছে মৃতদেহ হস্তান্তর করে।

জানা গেছে, মৃতদেহের দাফনের ব্যবস্থা করেন কালীগঞ্জ উপজেলার ছয় আলেম। হাসপাতাল থেকেই মৃতদেহের গোসল করানো হয়। এরপর তাদের মাধ্যমে একটি সিএনজিতে মৃতদেহটি নিয়ে যাওয়া হয় কালীগঞ্জ উপজেলার জামাল ইউনিয়নের খাঞ্জাপুর গ্রামে। সেখানে জানাজা পড়ানোর জন্য আলেমদের পক্ষ থেকে গ্রামের মসজিদের খাটিয়া চাওয়া হয়। কিন্তু গ্রামবাসীরা খাটিয়া দিতে রাজি না হওয়ায় বাধ্য হয়ে মৃতদেহ মাটিতে রেখেই জানাজা সম্পন্ন করেন তারা। গ্রামবাসী দূরে দাঁড়িয়ে দাফনের কাজ দেখেন।

মৃতদেহ দাফন করেন কালীগঞ্জ মেইন বাসস্ট্যান্ড জামে মসজিদের ঈমাম ফারুক নোমানী, মাওলানা রুহুল আমিন, হাফেজ হেদায়াতুল্লাহ, মাওলানা ইয়াসিন, মাওলানা আতাউর রহমান ও হাফেজ শাহ জালাল। এ ছয় আলেমের মধ্যে জানাজার নামাজ পড়ানো ঈমাম ফারুক নোমানী জানান, জানাজার নামাজ পড়ানোর জন্য গ্রামবাসীর কাছে মসজিদের খাটিয়া চাওয়া হয়। কিন্তু গ্রামবাসী সেটি দিতে অস্বীকৃতি জানান। পরে মরদেহ মাটিতে রেখেই জানাজার নামাজ সম্পন্ন করে লাশ দাফন করা হয়।

কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শামীমা শিরিন মৃত ব্যক্তির সঙ্গে থাকা স্বজনদের বরাত দিয়ে জানান, চারদিন ধরে জ্বর ছিল তার। ঠান্ডা-কাশি এবং গলাব্যথাও ছিল। আমাদের সঙ্গে আগে থেকে তিনি কোনো প্রকার যোগাযোগ করেননি। গত দুই দিন ধরে তার অবস্থা খুব খারাপ হয়ে যায়। শনিবার রাত ১১টার দিকে হাসপাতালে আনার পথে তিনি মারা যান।

তিনি আরও জানান, হাসপাতাল থেকে মারা যাওয়ার এক ঘণ্টার মধ্যে তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়। নমুনা ইতোমধ্যে পাঠিয়ে দিয়েছি। এরপর পরিবারের সদস্যদের বুঝিয়ে রোববার সকালে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। মৃতদেহ দাফন ও কাফনের জন্য ছয় জনের একটি টিম কাজ করেছে।

আব্দুল্লাহ আল মাসুদ/এফএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।