খাবার না পেয়ে কাভার্ডভ্যানে বাড়ি ফিরছিল ৩৮ ভাটা শ্রমিক
কাভার্ডভ্যানে ময়মনসিংহ থেকে সাতক্ষীরার শ্যামনগরে যাওয়ার পথে শনিবার যশোরের চৌগাছায় জনতার হাতে নারী ও শিশুসহ ৩৮ জন আটক হয়। পরে তাদেরকে বাড়ি যাওয়ার নির্বিঘ্ন ব্যবস্থা করে দেন চৌগাছা পৌরসভার মেয়র, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও থানা পুলিশের ওসি।
যশোরের চৌগাছা বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, গাড়িটি চৌগাছা শহরে পৌঁছালে পেছন দিক সামান্য খোলা থাকায় ভেতরে থাকা মানুষের কথা শুনতে পাওয়া যায়। এসময় চৌগাছা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির যুগ্ম-সম্পাদক আজিজুর রহমান এডমিরালের নেতৃত্বে কয়েকজন যুবক কাভার্ডভ্যানটি আটকে দেন।
এসময় টহল পুলিশ গাড়ির ভেতর থেকে নারী ও শিশুসহ ৩৮ জনকে উদ্ধার করে। খবর পেয়ে চৌগাছা পৌরসভার মেয়র নূর উদ্দিন আল মামুন হিমেল, চৌগাছা থানা পুলিশের এসআই নজরুল ইসলাম ও বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইবাদৎ হোসেনের নেতৃত্বে তাদের প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
এ সময় মেয়র হিমেল শ্যামনগরের কাশিমাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ এবং ত্রিশালের বালিপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ বাদলের সঙ্গে কথা বলেন। কথা বলার পর শ্রমিকরা ময়মনসিংহ থেকে আসছেন এবং সাতক্ষীরার শ্যামনগরের কাশিমাড়ি ইউনিয়নের জয়নগর গ্রামে যাবেন বলে নিশ্চিত হন। পরে মেয়র তাদের খাবারের ব্যবস্থা করেন। চৌগাছার উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং থানা পুলিশের ওসির সঙ্গে পরামর্শ করে ওই শ্রমিকদের তাদের গ্রামে পাঠানো হয়।
গাড়ির চালক যশোরের শার্শা উপজেলার নাভারণের শরিফুল ইসলাম মিলন বলেন, ময়মনসিংহের ত্রিশালের বালিপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও সাতক্ষীরার শ্যামনগরের কাশিমাড়ি ইউপি চেয়ারম্যানের অনুরোধে তাদেরকে নিয়ে আসতে হয়েছে। তারা ত্রিশালের বালিপাড়া ইউনিয়নের একটি ইটভাটায় শ্রমিকের কাজ করতেন। করোনায় সকল ভাটা বন্ধ হয়ে গেছে। তাই বাড়িতে ফিরে যাচ্ছিলেন।
ওই কাভার্ডভ্যানে থাকা শ্রমিক সর্দার আরিফুল ইসলাম বলেন, আমরা ত্রিশালের বালিপাড়া থেকে শুক্রবার রাতে নারী ও শিশুসহ ৩৮ জন শ্রমিক সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার কাশিমাড়ি ইউনিয়নে যাচ্ছিলাম। দশদিন আগে আমাদের মালিক ভাটা বন্ধ করে দিয়েছেন। প্রায় সাতদিন ধরে না খেয়ে ছিলাম। অতঃপর ভাটা মালিকের পরামর্শে এ গাড়িতে করে বাড়ি ফিরছি।
চৌগাছার পৌর মেয়র নূর উদ্দিন আল মামুন হিমেল বলেন, শ্রমিকরা যেন নিজেদের বাড়িতে পৌঁছাতে পারেন এজন্য ইউএনও জাহিদুল ইসলাম, ওসি রিফাত খান রাজীবের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা করা হয়েছে।
মিলন রহমান/এমএএস/এমকেএইচ