মরিচা ধরেছে রেললাইনে
উত্তরাঞ্চলসহ দেশের গুরত্বপূর্ণ রেলওয়ে জংশন স্টেশন গাইবান্ধার বোনারপাড়া। ইংরেজ শাসন আমল থেকে শুরু হয়, পরে পাকিস্তান শাসনামলে এটি জংশন স্টেশন খ্যাতি নিয়ে ঐতিহ্যবাহী ফুলছড়ি ঘাট ও বালাসী ঘাটের মাধ্যমে দেশের নৌ-পথের সঙ্গে রেলপথের সংযোগ দেয়। যমুনা সেতু নির্মাণের পর সময়ের ব্যবধানে যমুনা নদীর নাব্য সংকটে এই ঘাট দুটি বিলপ্ত হলেও এখনও ঐতিহ্য ধরে রেখেছে বোনারপাড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশন।
২০১৮ সালে ভয়াবহ বন্যার সময় যখন গাইবান্ধা সদরের সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের ট্রেন যোগযোগ বন্ধ ছিল তখনও বোনারপাড়া রেলওয়ে স্টেশন থেকে ট্রেন চলেছিল। কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারণে ২৪ মার্চ থেকে এই রুটসহ সারা দেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেয়ায় ভিন্ন চিত্র লক্ষ্য করা গেছে। স্টেশনটি এখন ভুতুড়ে রূপ ধারণ করেছে। রেললাইনে মরিচা ধরেছে।
বোনারপাড়া রেলওয়ে স্টেশন এলাকার ৭২ বছর বয়সী বৃদ্ধ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, প্রথমে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় কয়েক মাস এবং ১৯৮৮ সালের ভয়াবহ বন্যার সময় কিছুদিন এই রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। এবার করোনার কারণে ট্রেন চলাচল অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। রেললাইনে মরিচা ধরায় নতুন ইতিহাস সৃষ্টি হলো।
ব্যবস্যায়ী একরামুল হক জানান, ঐতিহ্যবাহী এই রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধের কারণে জীবন চালানো হুমকির মুখে পড়েছে রেল কেন্দ্রীক কর্মজীবী মানুষের।
মুক্তিযোদ্ধা মাহবুবুর রহমান জানান, দেশ ক্রমেই ভয়বহতার দিকে যাচ্ছে। আমরা হতাশায় আছি আগামীতে কী হবে। ঐতিহ্যবাহী বোনারপাড়া রেলওয়ে স্টেশনের কর্যক্রম বন্ধ থাকার কারণে মনে হয় ১৯৭১ সালের যুদ্ধের কথা।
বোনারপাড়া রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মো. তছলিম উদ্দিন জাগো নিউজকে জানান, বোনারপাড়া রেলওয়ে স্টেশন ঘিরে এখানে (ইঞ্জিনিয়ার ওয়ে) পিডাবলু অফিস, (ইঞ্জিনিয়ার ওয়ার্কস) আই ডাবলু অফিস, লোকো সেড, স্টোর অফিস, লাইটিং অফিস, জিআরপি থানা, রেলওয়ে গোয়েন্দা নিরাপত্তা চৌকি রয়েছে। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর এই প্রথম সারাদেশের ট্রেন চলাচল একসঙ্গে বন্ধ হলো। এর ফলে রেললাইনে মরিচা লক্ষ্য করা গেছে। তবে লাইনের কোনো ক্ষতি হবে না। আমরা নিয়মিত অফিস চলাচ্ছি।
জাহিদ খন্দকার/এফএ/এমকেএইচ