‘নুসরাতের জন্য ভালোবাসা’

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ফেনী
প্রকাশিত: ০৫:০১ পিএম, ১০ এপ্রিল ২০২০

ফেনীর সোনাগাজীর আলোচিত মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তার কবরে ফুলেল শ্রদ্ধাঞ্জলি দিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

শুক্রবার বেলা ১১টায় পিবিআইয়ের পরিদর্শক আবুল কাসেম ভূঞা ও রতেফ চন্দ্র দাসের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি দল নুসরাতের কবরে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। তাদের ফুলেল শ্রদ্ধায় লেখা ছিল ‘নুসরাতের জন্য ভালোবাসা’ পিবিআই। এ সময় কবর জিয়ারতে অংশ নেন পিবিআই সদস্যরা।

মোনাজাত পরিচালনা করেন নুসরাতের বাবা একেএম মুসা মানিক। মেয়ের জন্য জান্নাতুল ফেরদাউস কামনা করে মোনাজাতে আল্লাহর কাছে কাঁদলেন মুসা মানিক।

এ সময় তিনি করোনাভাইরাসের মহামারি থেকে বিশ্ববাসীর জন্য কল্যাণ কামনা করে পানাহ চান। মোনাজাতে অংশ নিয়ে পিবিআইয়ের সদস্যরাও কাঁদলেন নুসরাতের জন্য।

কবর জিয়ারত শেষে পিবিআইয়ের সদস্যরা নুসরাতের বাবা ও ভাইকে বলেন, আপনাদের পাশে থাকবে পিবিআইয়ের সদস্যরা। যেকোনো আপদে-বিপদে পিবিআইকে আপনাদের পাশে পাবেন।

এ সময় সোনাগাজী মডেল থানা পুলিশের ওসি মঈন উদ্দিন আহমেদ ও ওসি (তদন্ত) আবদুর রহিম সরকার উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে সকালে নুসরাতের বাড়িতে পরিবারের আয়োজনে কোরআন খতম, মিলাদ ও বিশেষ মোনাজাতের আয়োজন করা হয়। এ সময় মোনাজাত পরিচালনা করেন সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল ডিগ্রি মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোহাম্মদ হোসাইন। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন ওই মাদরাসার আরবি প্রভাষক আবুল কাসেম ও স্থানীয় মসজিদের ইমাম নজরুল ইসলাম।

শুক্রবার সকালে সোনাগাজী মডেল থানার ওসি মঈন উদ্দিন আহমেদ নুসরাতের বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারের সদস্যদেরকে সান্ত্বনা ও সাহস দেন। যেকোনো পরিস্থিতিতে সোনাগাজী মডেল থানা পুলিশ নুসরাতের পরিবারের পাশে আছে এবং থাকবে বলেও আশ্বাস দেন ওসি।

নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বলেন, মহান আল্লাহর দরবারে আমার বোনের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। আমরা বিচারিক আদালতে ন্যায় বিচার পেয়েছি। আমরা শুনেছি দণ্ডপ্রাপ্তরা উচ্চ আদালতে আপিল করেছেন। উচ্চ আদালতে আপিলের শুনানি শুরু হবে। উচ্চ আদালতের কাছেও আমরা ন্যায় বিচার প্রত্যাশী। আদালত যে রায় দেন আমরা তা মেনে নেব। আমাদের পরিবারের জন্য একমাত্র হুমকি আসামিদের স্বজন ও ক্যাডারদের ব্যবহৃত ফেসবুক। তাদের ফেসবুক আইডি থেকে আমাদের পরিবার ও আমার বোন নিয়ে বিষোদগার করে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হচ্ছে।

নুসরাতের বাবা একেএম মুসা মানিক বলেন, সবার কাছে আমার মেয়ের জন্য দোয়া চাই। আমাদের দৃষ্টি এখন উচ্চ আদালতের দিকে। আদালতের রায়ের প্রতি আমরা সবসময় শ্রদ্ধাশীল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অতীতে যেমন আমাদের পাশে ছিলেন ভবিষ্যতেও থাকবেন বলে আশাবাদী আমরা।

২০১৯ সালের ৬ এপ্রিল আলিম পরীক্ষার আরবি প্রথমপত্র পরীক্ষা দিতে গেলে হল থেকে ডেকে পাশের ভবনের ছাদে নিয়ে নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয় সহপাঠীরা। এতে তার শরীরের ৮৫ শতাংশ পুড়ে যায়। ২০১৯ সালের ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে নুসরাত জাহান রাফি। এ ঘটনায় ১৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

রাশেদুল হাসান/এএম/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।