মধ্যরাতে সাংবাদিককে সাজা, কুড়িগ্রামে প্রতিবাদ

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি কুড়িগ্রাম
প্রকাশিত: ০৬:১৩ পিএম, ১৪ মার্চ ২০২০

কুড়িগ্রামে মধ্যরাতে বাসা থেকে ধরে নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে বাংলা ট্রিবিউনের জেলা প্রতিনিধি আরিফুল ইসলামকে কারাদণ্ড দেয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন স্থানীয় সাংবাদিকসহ সর্বস্তরের মানুষ।

শনিবার (১৪ মার্চ) দুপুরে শহরের শাপলা চত্বরে এ মানববন্ধন করা হয়। এতে বক্তব্য রাখেন প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান বিপ্লব, সাংবাদিক রাজু মোস্তাফিজ, হুমায়ুন কবির সূর্য, ছানালাল বকসী ও শ্যামল ভৌমিক।

মানববন্ধন থেকে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানানো হয়। একই সঙ্গে এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চেয়ে সাংবাদিক আরিফুল ইসলামের মুক্তি চেয়েছেন তারা।

শুক্রবার (১৩ মার্চ) মধ্যরাতে জেলা প্রশাসনের তিন ম্যাজিস্ট্রেটসহ টাস্কফোর্সের সদস্যরা আরিফুল ইসলামকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যান। এ অভিযান পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিন্টু বিকাশ চাকমা।

জেলা সদরের কৃষ্ণপুর চরুয়াপাড়া এলাকার বাড়ি থেকে আরিফুলকে তুলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নেয়া হয়। এরপর তার কাছে ৪৫০ মিলিলিটার দেশি মদ ও ১০০ গ্রাম গাঁজা পাওয়া গেছে বলে মধ্যরাতে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে এক বছরের কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে সঙ্গে সঙ্গে কারাগারে পাঠানো হয়।

অভিযান পরিচালনাকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিন্টু বিকাশ চাকমা বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ, আনসার ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সমন্বয়ে টাস্কফোর্সের অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ অভিযানের সময় মাদকসহ আরিফুল ইসলামকে আটক করা হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালতের সামনে দোষ স্বীকার করায় তাকে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

সাংবাদিক আরিফুলের স্ত্রী মোস্তারিমা সরদার নিতু জানান, শুক্রবার রাত ১২টার দিকে খাওয়া শেষে ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তারা। এ সময় হঠাৎ কয়েকজন ব্যক্তি দরজা ধাক্কাধাক্কি শুরু করলে সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি মোবাইল ফোনে স্বজনদের জানান আরিফুল। একপর্যায়ে দরজা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে আরিফুলকে ধরে মারধর শুরু করেন তারা।

এ সময় বাধা দিতে গেলে ওই ব্যক্তিরা তাকেও মারতে উদ্যত হন। এরপর তারা আরিফুলকে তুলে নিয়ে যান। তাদের মধ্যে পোশাক ও অস্ত্রধারী কয়েকজন ছিলেন। পরে জানতে পারেন আরিফুলকে ডিসি অফিসে নিয়ে মাদক মামলা দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতে সোপর্দ করলে এক বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। দণ্ড ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে মধ্যরাতে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

নিতুর দাবি, সম্প্রতি জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীনের বিরুদ্ধে বাংলা ট্রিবিউনে সংবাদ প্রকাশ এবং ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে প্রশাসনের লোকজন আরিফুলকে এভাবে তুলে নিয়ে গেছে। স্বামীর মুক্তি ও এ ঘটনার তদন্ত করে ন্যায়বিচার দাবি করেন নিতু।

নাজমুল/এএম/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।