সহকর্মীর লাশ বেওয়ারিশ হিসেবে দাফনের পর মিলল পরিচয়
গাজীপুরে ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের সামনে থেকে গত ৪ মার্চ উদ্ধার হওয়া পরিচয়হীন গলাকাটা লাশের পরিচয় পেয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। উদ্ধারকৃত ওই লাশটি গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের এক সদস্যের। তার নাম মো. শরীফ আহাম্মেদ (৩৩)। তিনি ময়মনসিংহের ত্রিশাল থানার ঝিলকি এলাকার মো. আলাউদ্দিন ফকিরের ছেলে।
শরীফ গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) ট্রাফিক দক্ষিণ বিভাগে প্রায় ৬ মাস ধরে কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত ছিলেন। গত ৮ মার্চ বেওয়ারিশ হিসেবে তার লাশ গাজীপুর মহানগরীর পূর্ব চান্দনা কবরস্থানে দাফন করা হয়। নিহতের বাবা মো. আলাউদ্দিনও একজন পুলিশ সদস্য। তিনি ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা শহর ফাঁড়িতে কনস্টেবল পদে কর্মরত।
বৃহস্পতিবার দুপুরে গাজীপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মরদেহ উত্তোলনের জন্য আবেদন করা হয়। পরে আদালতের নির্দেশে কবর থেকে লাশ উত্তোলন করে সনাক্তের পর স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
গাজীপুর সদর থানা পুলিশের এসআই লুৎফর রহমান বলেন, গাজীপুরে বেওয়ারিশ হিসেবে দাফনের চারদিনের মাথায় নিহতের ফিঙ্গার প্রিন্ট পরীক্ষা করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) নিহতের পরিচয় নিশ্চিত করেন।
তিনি আরও বলেন, গত ৪ মার্চ দুপুরে গাজীপুরের ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের চার নম্বর সামনে রাস্তার পূর্ব পাশ থেকে পুলিশ কনস্টেবল শরীফের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এরপর ময়নাতদন্ত করে ও ফিঙ্গার প্রিন্ট নিয়েও তার পরিচয় সনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ। পরে গত ৮ মার্চ গাজীপুর সিটি করপোরেশনের পূর্ব চান্দনা কবরস্থানে বেওয়ারিশ হিসেবে তার মরদেহ দাফন করা হয়। তখনও পুলিশ সদস্যরা জানতো না লাশটি তাদের সহকর্মীর।
এদিকে, গত ৩ মার্চ শরীফ নিখোঁজের পর তার পুলিশ কনস্টেবল বাবা মো. আলাউদ্দিন টঙ্গী পূর্ব থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
জিডিতে তিনি উল্লেখ করেছেন, ২১ দিন ছুটি কাটিয়ে গত ২ মার্চ কর্মস্থলে যোগ দেন শরীফ। সর্বশেষ ৩ মার্চ রাত ১১টা ১০ মিনিটে তার স্ত্রী ও ছেলের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। এরপর থেকে তার কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছিল না।
নিহতের মামা আব্দুস সালাম বলেন, শরীফ পুলিশ সদস্য ছিলেন। তাকে বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা অত্যন্ত দুঃখজনক। তার মুখমণ্ডল বিকৃত হয়নি। দেখে স্পষ্ট বুঝা যায় এটিই শরীফ। তিনি আরও বলেন, বুধবার (১১ মার্চ) রাত ১০টার দিকে পিবিআইয়ের এসআই সুমন ফোন করে মরদেহের পরিচয় শনাক্তের কথা জানিয়েছেন।
আমিনুল ইসলাম/এমএএস/জেআইএম